• ঘন কুয়াশায় দিকভ্রষ্ট, কখনও মরা পশুর লোভেই লোকালয় ঘেঁষা বনে দক্ষিণরায়
    বর্তমান | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বারুইপুর: দু’সপ্তাহের মধ্যে বারবার পাঁচবার মৈপীঠের লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গলে ঢুকল বাঘ। এর মধ্যে বৈকুন্ঠপুর পঞ্চায়েত এলাকাতেই চারবার হানা দিল। আর একবার গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী পঞ্চায়েতে। বনদপ্তরের অনুমান, রয়েল বেঙ্গল টাইগার বেরিয়েছিল হয় আজমলমারি এক নম্বর জঙ্গল থেকে। নয়ত আজমলমারি এগার নম্বর জঙ্গল থেকে। তারপর মাগরি বা ঠাকুরাণ নদী পেরিয়ে লোকালয়ের কাছাকাছি আসে। এই রাস্তার দূরত্ব মেরেকেটে ৩০০ মিটার। এই রুটেই বারবার আসছে বাঘ। কেন আসছে? বনদপ্তরের এক আধিকারিক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘ঘন জঙ্গল থেকে লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গলের দূরত্ব কম থাকা একটি কারণ। তাছাড়া এখন ঘন কুয়াশা। বাঘ দিকভ্রষ্ট হচ্ছে। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে নদীকে ভেবে নিচ্ছে খাঁড়ি। তারপর চিনতে না পেরে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে সোজাসুজি না গিয়ে দূরে লোকালয়ের দিকে এসে জঙ্গলে উঠছে।   


    বনদপ্তরের বক্তব্য, জঙ্গলে বাঘের খাবার কম পড়ছে এ তথ্য ঠিক নয়। ওরা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে খাঁড়ির পথে ঢুকছে। জঙ্গলে পেতে রাখা জাল কাটা থাকছে। তাই বাঘের পক্ষে ঢোকা-বেরনো সহজ হয়ে যাচ্ছে। ভুবনেশ্বরী, বৈকুন্ঠপুর, কিশোরীমোহনপুর, নগেনাবাদ, গঙ্গার ঘাট এলাকায় অধিকাংশ জায়গাতেই জাল কাটা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কাঁকড়া ধরতে গিয়ে তা কেটে দিচ্ছেন মৎস্যজীবীদের একাংশ। বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, একই রুটে চলে আসার প্রাথমিক কারণ মনে হচ্ছে, আজমলমারি এক, তিন, চার, ১১, ১২ নম্বর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ের কাছে চলে আসছে। সেখানে চিতুরির মুখ, চা পাতার ঘাট, লিথুনাইয়ার ঘাটের দিকে থাকা লোকালয়ের কাছে জঙ্গল নেই। অন্যদিকে যে লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গলে বাঘ ঘাঁটি গাড়ছে সেখানে প্রচুর বন্যপ্রাণী। বন শুয়োর, বন বিড়াল, চিতাবাঘ বিড়ালের দেখা মেলে। এখানে খাবার পাওয়ার পেয়ে যায় বাঘ। পাশাপাশি লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গলের কাছে মরা গৃহপালিত পশু ফেলেন গ্রামবাসীরা। সেগুলির টানেও চলে আসে। তারপর সহজে খাবার পেয়ে যাওয়ায় একবার এই জঙ্গলে এসে পড়লে নড়তে চায় না। রায়দিঘি রেঞ্জে সতেরোটি বাঘের দেখা মিলেছিল। তার মধ্যে বেশিরভাগেরই বসবাস ওই জঙ্গলগুলিতে।


    কারণ যাই হোক, যখন তখন বাঘ ঢুকে পড়ার আতঙ্ক গ্রামবাসীদের কোনওভাবেই দূর হচ্ছে না। বনদপ্তরকে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। 
  • Link to this news (বর্তমান)