সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ভেঙে পড়ল কয়লা বোঝাই চলন্ত মালগাড়ির চাকা। ঘটনায় লাইনচ্যুত হল মালগাড়ির একটি বগি। আজ, শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে তারাপীঠ রোড স্টেশনের কাছে দাঙাল গ্রামের লেভেল ক্রসিং গেট সংলগ্ন এলাকায়। এই ঘটনার জেরে আপ লাইনে ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচল। বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে বহু দুরপাল্লার ট্রেন। যার মধ্যে রয়েছে হাওড়া নিউ জলপাইগুড়ি বন্দেভারত এক্সপ্রেসও। স্বাভাবিকভাবেই সমস্যায় পড়েন রেল যাত্রীরা। ঘটনার প্রায় একঘণ্টা দশ মিনিট পর অন্য লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন গোড্ডাগামী কয়লা বোঝাই মালগাড়িটি তারাপীঠ রোড স্টেশন অতিক্রম করছিল। সেই সময় হঠাৎই শেষ বগির চাকা ভেঙে যায়। যার জেরে লাইনচ্যুত হয় বগিটি। স্তব্ধ হয়ে যায় আপ মেন লাইন ও রিভার্সিবল লাইনে ট্রেন চলাচল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে উদ্ধারকারী দল এবং রেল আধিকারিকরা। তাঁরা মালগাড়ির চাকা মেরামতির পাশাপাশি রিভার্সিবল লাইন দিয়ে যাতে ট্রেন চলাচল শুরু করা যায় সেই কাজ শুরু করেন। এই ঘটনার জেরে বিভিন্ন স্টেশনে আপ ট্রেনগুলি দাঁড়িয়ে পড়ে। রামপুরহাট জিআরপির আইসি সুখেন্দু মণ্ডল বলেন, সাঁইথিয়া স্টেশনে মিনিট ২০ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় হাওড়া নিউ জলপাইগুড়ি বন্দেভারত এক্সপ্রেসকে। মল্লারপুর স্টেশনে আটকে পড়ে আপ গনদেবতা এক্সপ্রেস এবং বর্ধমান তিনপাহাড় লোকাল। এছাড়া বিভিন্ন স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস-সহ বিভিন্ন দুরাপল্লার ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। স্বভাবতই তীব্র যাত্রী ভোগান্তি শুরু হয়। তিনপাহাড় লোকালের অনেক যাত্রী নেমে বাস ধরে রামপুরহাটে চলে আসেন। অবশেষে ১০টা ৫০ মিনিট নাগাদ রিভার্সিবল এবং ডাউন মেন লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। যদিও আপ মেন লাইনেই দাঁড়িয়ে থাকে মালগাড়িটি। পরে ক্ষতিগ্রস্ত বগিটি ছেড়ে দিয়ে বাকি বগিগুলি নিয়ে মালগাড়িটি গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। পরে এদিন দুপুর নাগাদ ক্ষতিগ্রস্ত বগিটির চাকা সারিয়ে ক্রেন দিয়ে লাইনে তুলে সেটিকে রামপুরহাট জংশনে নিয়ে আসা হয়। এই ঘটনায় এদিন অধিকাংশ ট্রেনই ওই লাইনে দেরিতে চলাচল করেছে।
এদিন ভোগান্তির মুখে পড়া যাত্রীরা বলেন, ক্রমশ রেল যাত্রা দুর্ভোগের হয়ে উঠেছে। কখনও দুর্ঘটনা, কখনও আবার বেলাইন হয়ে যাচ্ছে। আবার কখনও ইঞ্জিন বিকল হচ্ছে। অথচ রেলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যাত্রী পরিষেবায় উন্নত হচ্ছে রেল। কিন্তু কোথায়? নিশ্চয় নজরদারির অভাব রয়েছে। যাত্রীবাহী চলন্ত ট্রেনে এমন ঘটনা ঘটলে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। অন্যদিকে, এদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ পূর্ব রেলের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তারাপীঠ রোড স্টেশনে রিভার্সিবল এবং ডাউন মেন লাইন উপলব্ধ থাকায় ঘটনার ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট পর আপ ও ডাউন উভয় লাইনেই ট্রেন চলাচল শুরু হয়। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন রেল কর্তারা।