• ওপার থেকে বোমা-ইট বৃষ্টি, উত্তপ্ত মালদহের শুকদেবপুর সীমান্ত  
    বর্তমান | ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, কালিয়াচক: উত্তেজনা বেড়েই চলেছে মালদহের কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের শুকদেবপুর সীমান্তে। অভিযোগ, বিজিবির মদতে ভারতে ঢুকে বোমাবাজি করেছে এবং বাসিন্দাদের উপর হামলা চালিয়েছে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা। এ ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। দুষ্কৃতীদের ছোড়া পাথর ও বোমায় আহত হয়েছেন দুই বিএসএফ জওয়ান সহ জনাকয়েক স্থানীয় বাসিন্দা। যদিও বিএসএফ বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, জওয়ানদের কিছু হয়নি। দু’দেশের গ্রামবাসীদের মধ্যে গণ্ডগোল হয়। মালদহ পুলিসের এক আধিকারিক জানান, শনিবার সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। 


    রাজ্যের উন্মুক্ত সীমান্তগুলির মধ্যে শুকদেবপুর অন্যতম। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, সকালবেলা ভারতের বাসিন্দারা নিজেদের চাষের জমিতে গিয়ে দেখতে পান ফসল লুট করে নিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা। তাঁরা বিএসএফ জওয়ানদের বিষয়টি দেখান। তখনই বিএসএফ’কে লক্ষ্য করে ওপার থেকে ঢিল ছুড়তে শুরু করে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা। সঙ্গে বেশ কয়েকটি বোমাও ছোড়ে। এই ঘটনায় দুই জওয়ান আহত হন। একজনের মাথায় ও আর একজনের পায়ে আঘাত লাগে। দীপঙ্কর মণ্ডল নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘সকালে ওপার থেকে প্রচুর লোকজন বিএসএফ’কে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এপারের বাসিন্দারা রুখে দাঁড়াতেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আমরা কিছুদিন ধরে দেখছি বিজিবি ওদের মদত দিচ্ছে। ওপার থেকে ইট, বোমা ছোড়া হয়েছে। গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে ওপারের দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।’ বারবার বাংলাদেশের দিক থেকে হামলা নেমে আসার পর এবার এককাট্টা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ফের আক্রমণ হলে জবাব দিতেও তৈরি। অলোক প্রামাণিক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘ওরা কিছু করলে আমরাও জবাব দেব। বিএসএফের সঙ্গে আমরা সীমান্তের নিরাপত্তা বজায় রাখতে রাত জাগছি।’


    রাজ্য এবং দেশের উত্তেজনাপ্রবণ সীমান্তগুলির মধ্যে শুকদেবপুরের নাম  এখন ঢুকে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে এখানে বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া দিতে গেলে বিজিবি আপত্তি করে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে কাজ আপাতত বন্ধ। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের তরফে প্ররোচনা বন্ধ হয়নি। গত সপ্তাহে মালদহের নওদা সীমান্তে রাতের অন্ধকারে এপারে এসে লুটপাট চালানোর সময় বিএসএফকে আক্রমণ করেছিল বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। বিএসএফ শূন্যে গুলি চালানোর পর তারা পিছু হঠে। দু’দিন আগে হবিবপুর সীমান্ত দিয়েও বাংলাদেশি পাচারকারীরা এদেশে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। মহিলা জওয়ানরা গুলি চালিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেন। এবার সীমান্তের নিরাপত্তা কয়েকগুণ বাড়ানোর দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁরা মনে করছেন, বারবার হামলার পিছনে নিশ্চয়ই বড় কোনও কারণ লুকিয়ে আছে।
  • Link to this news (বর্তমান)