• ৩ হাজার উপভোক্তার টাকা আটকে দিল জেলা প্রশাসন
    বর্তমান | ২২ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বীরভূম: রাজ্যজুড়ে বহু দুঃস্থ মানুষ ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ঘর পাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু এই প্রকল্প ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। রাজ্য সরকারের সৌজন্যে বহু অসহায় পরিবারের পাকা ঘরে দিন কাটানোর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। কিন্তু এর মধ্যেই অনেকে এই প্রকল্পের টাকা হাতানোর ফন্দি করেছে। প্রকল্পের উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকা শুরু হতেই তা স্পষ্ট হয়েছে। এরকম বেশ কিছু অভিযোগ পেয়ে এবার জেলা প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করল। বীরভূম জেলায় প্রায় তিন হাজার উপভোক্তার টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে। কোনওরকম অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না বলে জেলা প্রশাসন পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে।


    এবার প্রকল্পের উপভোক্তাদের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে। জেলাজুড়ে উপভোক্তাদের ইউডিআইএন(ইউ঩নিক ডকুমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) লিঙ্ক করার কাজ চলছে। এক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, আধার ও ফোন নম্বর লিঙ্ক করা হচ্ছে। জেলায় এর সিংহভাগ কাজ শেষ হয়েছে।


    জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ইউডিআইএন লিঙ্কের কাজ রূপায়িত করা হচ্ছে। বাকি কাজ খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে। কোনও অভিযোগ এলে তাড়াতাড়ি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রতি ক্ষেত্রেই আমরা উপযুক্ত পদক্ষেপ করছি।


    প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার সময় জেলায় প্রায় ৪০ হাজার নাম বাদ পড়েছিল। বীরভূমের ১৯টি ব্লকের ৫২হাজার উপভোক্তা ঘর পাচ্ছেন। বহু উপভোক্তার অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকে গিয়েছে। তাঁরা অনেকে ঘর তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু এরই মাঝে বেশ কিছু অভিযোগের জেরে জেলার প্রায় তিন হাজার উপভোক্তার টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে।


    অভিযোগ, তথ্য গোপন করে বহু অযোগ্য ব্যক্তি নিজেদের নাম তালিকায় তুলে ফেলেছে। অনেকের অন্যত্র পাকা বাড়ি থাকলেও সেকথা গোপন রেখে আবেদন করেছেন। আবার অনেকে নিজেদের আর্থিক সচ্ছলতার কথা গোপন রেখেছে। এবার জেলা প্রশাসন তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করল। প্রশাসন জানিয়েছে, বাংলার বাড়ি প্রকল্প নিয়ে কোনওরকম অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। ৫২হাজার উপভোক্তার তালিকায় আর এমন কেউ রয়েছে কিনা-তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে নির্দিষ্ট উপভোক্তার অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকছে কিনা-তাও নিশ্চিত করা হচ্ছে।


    জেলার ৫২হাজার উপভোক্তার ইউডিআইএন লিঙ্কের কাজ ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে। তার জন্য ব্লক প্রশাসনের তরফে পঞ্চায়েত এলাকায় শিবির করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকদের আশা, খুব তাড়াতাড়ি বাকি কাজও শেষ হয়ে যাবে। এই কাজ শেষ হয়ে গেলে অনিয়ম রুখতে খুবই সুবিধা হবে। সঠিক উপভোক্তার অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকছে কিনা-তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)