নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ক্লাবের তরফে আয়োজন করা হয়েছিল সাইকেল রেসিং প্রতিযোগিতা। তাতে অংশগ্রহণকারী এক প্রতিযোগীর লরির ধাক্কায় মৃত্যুর ঘটনায় গোপীবল্লভপুরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম লক্ষ্মীরাম কিস্কু(৩৫)। তাঁর বাড়ি জামবনি থানার রানিপাল গ্ৰামে। বৃহস্পতিবার সকালে গোপীবল্লভপুর ফরেস্ট লাগোয়া রাস্তায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। রাতে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় মৃতের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।
গোপীবল্লভপুরের এসডিপিও পারভেজ সরফরাজ বলেন, সাইকেল রেস চলার সময় ওই রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা কোনও লরি চলতে শুরু করায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। লরিটিকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় একটি ক্লাবের উদ্যোগে গোপীবল্লভপুর যুব উৎসব পালিত হচ্ছে। উৎসবের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবিলা থেকে গোপীবল্লভপুর হাতিবাড়ি মোড় পর্যন্ত ২০ কিমি সাইকেল রেস প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। মোট ন’জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় চাঁদাবিলা থেকে প্রতিযোগিতার সূচনা হয়। প্রায় ১৩কিমি পথ পেরিয়ে আসার পর দুর্ঘটনাটি হয়। সাইকেলে রেসে তৃতীয় স্থানাধিকারী কুনারাম মুর্মু বলেন, আমরা সাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় দু’-তিনটি লরি চলাচল করছিল। মুখোমুখি আসা একটি লরি রাস্তার বাঁদিকে আমাদের দিকে চলে আসে। আমি কোনওমতে পাশ কাটাতে পারলেও ওই প্রতিযোগীকে লরিটি ধাক্কা মারে। তাঁর হাত, পা ও মাথায় লাগে। উৎসব কমিটির লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে গোপীবল্লভপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু, বাঁচানো যায়নি।
ওই উৎসব কমিটির সম্পাদক বলেন, সাইকেল রেসের জন্য রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। রাস্তায় কয়েকটি লরি দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের মধ্যে একটি লরি ফাঁকা রাস্তায় আচমকা গাড়ি ঘোরাতে গিয়েই দুর্ঘটনাটি ঘটে। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ওই প্রতিযোগীর পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি।
মৃতের ভাই তারাপদ কিস্কু বলেন, সাইকেল প্রতিযোগিতায় দাদার সঙ্গে আমিও অংশগ্রহণ করেছিলাম। প্রায় ১৫ বছর ধরে আমরা একসঙ্গে সাইকেল রেসে অংশ নিচ্ছি। আমি একটু সামনে ছিলাম। এভাবে ওকে হারাতে হবে ভাবতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, দাদা গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতেন। বউদি ও দুই নাবালক ভাইপো-ভাইঝি রয়েছে। এই ঘটনা মেনে নিতে পারছি না।