জেলে দুঃস্থ বন্দিদের আইনি সহায়তা দিতে উদ্যোগী রাজ্য
বর্তমান | ২৭ জানুয়ারি ২০২৫
সুকান্ত বসু, কলকাতা: রাজ্যের সমস্ত জেলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া বন্দিরা যাতে সব রকমের আইনি সহায়তা পান, সেই বিষয়ে আরও বেশি করে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র রাজ্যের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারই নয়, জেলা ও মহকুমা জেলেও আরও বেশি মাত্রায় লিগ্যাল এইড ক্যাম্প খোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হল। পাশাপাশি বিভিন্ন সংশোধনাগারে থাকা লিগ্যাল আউটলেটকেও চাঙ্গা করা হচ্ছে। যাতে করে ওই সমস্ত বন্দিরা তাঁদের মামলার খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সরাসরি সেখানে জানাতে পান। অর্থাৎ বিনা বিচারে যাতে কোন বন্দি দীর্ঘদিন জেলের মধ্যে আটকে না থাকেন, সে কারণেই সরকারি তরফে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে কারা দপ্তর সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের প্রতিটি জেলেই মাঝে মধ্যে লিগ্যাল এইডের কর্তারা বন্দিদের সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে আসেন। সেখানে তাঁদের স্বাস্থ্য, খাবারে গুণগত অবস্থা খতিয়ে দেখে সেই মর্মে রিপোর্টও দিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে। এবার সেই কাজ আরও বেশি মাত্রায় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সমস্ত বন্দিদেরই মামলার যাবতীয় খোঁজখবর নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে যে সমস্ত বন্দিদের বাড়ির লোকজনের মামলা চালানোর মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই, তাঁদের লিগ্যাল এইড থেকে সবরকমভাবে সহযোগিতা দেওয়া হবে। অর্থাৎ যাতে করে আদালতে মামলা চলাকালে ওই বন্দি আত্মপক্ষ সমর্থনের সমস্ত সুযোগ পান। কারা দপ্তরের এক অফিসারের কথায়, বিভিন্ন জেলে যে সমস্ত লিগ্যাল এইডের ক্যাম্প চলে, সেখানে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দিদের মধ্যে উৎসাহিতদেরও কাজে লাগানো হবে। অর্থাৎ বন্দিরা যাতে বিচার থেকে কোনভাবেই বঞ্চিত না হন, সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।
রাজ্য আইনি সহায়তা কেন্দ্র সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রতিটি জেলায় তারা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষে জন্য বিনা মূল্যে আইনি সচেতনতা পাঠ দিতে মাঝে মধ্যেই আইনি শিবিরের আয়োজন করে থাকে। এবার বিভিন্ন জেলে লিগ্যাল এইড ক্যাম্প থেকেও আইনের সচেতনতা পাঠ দেওয়া হবে বন্দিদের। ব্যাঙ্কশাল আদালতের আইনজীবী সংগঠনের কর্তা তথা সরকারি কৌঁসুলি প্রবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, 'কোন বন্দির যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয়, সেই বিষয়টি দেখা অত্যন্ত জরুরি। তাই সেক্ষেত্রে সরকারি এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়।' সরকারি কৌশলী অসীম কুমার এ প্রসঙ্গে বলেন, 'নানা ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে কিছু বন্দি মামলার বিষয় অবগত নন। সে ক্ষেত্রে জেলে লিগ্যাল আউটলেট থেকে যদি তাঁরা মামলায় বিষয়ব সম্পর্কে অবগত থাকেন, তাহলে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হবে না। এ বিষয়ে সরকার আরও বেশি মাত্রায় এগিয়ে আসায় বন্দিরা উপকৃত হবেন।'