• পল্লিশ্রী-সাহেবনগর রাস্তার দু’ধারে মূল্যবান গাছ কেটে সাফ দুষ্কৃতীদের
    বর্তমান | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: ভরতপুর থানার পল্লিশ্রী থেকে সাহেবনগর যাওয়ার রাস্তার পাশে দিনের পর দিন গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। গত ১৫দিনে ওই রাস্তার দুই ধারের অসংখ্য মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। যদিও ইতিমধ্যে রাতে পুলিস গোপন সূত্রে জানতে পেরে কিছু কাটা গাছ বাজেয়াপ্ত করেছে। তবে দুষ্কৃতীদের ধরতে পারেনি। এই ঘটনায় বাসিন্দারা আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ। ঘটনায় কান্দি ফরেস্ট অফিসার অমলেন্দু বিশ্বাস জানিয়েছেন, পুলিস কাটা গাছগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে। গাছ কাটার জন্য বনবিভাগ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।


    ভরতপুর থানার সিজগ্রাম পঞ্চায়েতের পল্লিশ্রী গ্রাম থেকে একটি ঢালাই রাস্তা সাহেবনগর গ্রামে চলে গিয়েছে। ওই রাস্তার একদিকে কৃষি জমি ও অন্যদিকে বাবলা নদী। তবে রাস্তায় মানুষজনের খুব একটা চলাচল নেই। রাস্তার দু’দিকে গাছেদের ঘন জঙ্গল। সেই সঙ্গে শেয়ালের উপদ্রব। ওই জঙ্গল থেকে প্রায় ১৫দিন ধরে দুষ্কৃতীরা গাছ কেটে পালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।


    ওই রাস্তার প্রায় ৩০০মিটার এলাকাজুড়ে রাস্তার দু’পাশের বহু মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এর কোনওটির ব্যাস এক মিটার পর্যন্ত। রাস্তার দু’ধারে এখনও কাটা গাছের অংশগুলি পড়ে রয়েছে। মেশিনের মাধ্যমে গাছগুলি কাটা হয়েছে। তবে অধিকাংশ বাসিন্দা সব জেনেও কিছু বলতে সাহস পাচ্ছেন না। যদিও কাটাইকোনা গ্রামের বাসিন্দা লতিফ শেখ বলেন, প্রায়দিন কাটা গাছগুলি সন্ধ্যার একাধিক ট্রাক্টরে করে পাচার হয়ে গিয়েছে। কাটাইকোনা গ্রাম থেকে ট্রাক্টরগুলি সালারের দিকে চলে যেত। তবে যারা এসব কাজ করত বাসিন্দারা তাদের আটকানোর সাহস পেতেন না। গাছ কাটার ফলে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হল। তেমনই বাবলা নদীর বাঁধের মাটিও আলগা হয়ে যাবে। এবার বন্যার আশঙ্কা বেড়ে গেল।


    স্থানীয় মিঞা গ্রামের বাসিন্দা নাগর ঘোষ বলেন, প্রায় ১৫দিন ধরে এই কাজ চলছে। তবে সব জেনে শুনেও আমাদের চুপ থাকতে হয়। কারণ এই রাস্তা দিয়ে আমাদের ব্যবসার কাজে যাতায়াত করতে হয়। তবে পুলিসের সজাগ হওয়া উচিত ছিল। এদিকে মঙ্গলবার রাতে ভরতপুর থানার পুলিস গাছ কাটার কথা জানতে পেরে সেখানে হানা দেয়। সেখান থেকে বেশকিছু কাটা গাছের অংশ পুলিস বাজেয়াপ্ত করেছে। তবে ট্রাক্টরগুলি আটক করতে পারেনি পুলিস। যদিও বাসিন্দারা দাবি করেছেন, প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গাছ কাটা চলছে। এই খবর প্রশাসনের কাছে আগেই যাওয়া উচিত ছিল। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসনও বিষয়টির গুরুত্ব দেয়নি। যদিও স্থানীয় সিজগ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রাসমিনা বেগম বলেন, যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে। সেটি দুর্গম এলাকা। তাই খবর না পাওয়াটাও আমাদের দুভার্গ্য। তবে বুধবার ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। আমরা দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছি। ঘটনায় কান্দি মহকুমা শাসক উৎকর্ষ সিং ঘটনার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। -নিজস্ব  চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)