অদম্য মনোবল সঙ্গী করেই মাধ্যমিকে বসছে নবদ্বীপের ৭ দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থী
বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: কেউ হতে চায় গায়িকা, কেউ শিক্ষক। অদম্য মনের জোরে প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে এবার জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসছে ওরা। নবদ্বীপের এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের সাত দৃষ্টিহীন পড়ুয়া এবার মাধ্যমিক দেবে।
এই পড়ুয়াদের বাড়ি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। নবদ্বীপে ব্লাইন্ড স্কুলের হোস্টেলে থেকেই তারা পড়াশোনা করে। পুরুলিয়ার লক্ষ্মী মাহাত, বীরভূমের নীহার খাতুন, করিমপুরের অঞ্জলি সর্দার ও আজিম মণ্ডল, নবদ্বীপের মহিশুরার তুহিন শেখ, পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটের আকাশ খান ও জলপাইগুড়ির উত্তম ওরাওঁ এখন পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। ওরা যে অনুলেখকদের সাহায্য নিয়ে পরীক্ষা দেবে, তাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই পরিচয়পর্ব সেরে ফেলেছে। স্কুলের তরফে অনুলেখকদের সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ২০১৮ সালে এই স্কুল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমোদন লাভ করেছে। আবাসিক থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীরা। নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের স্কুল থেকে রেকর্ডার দেওয়া হয়। শিক্ষকদের পড়ানো রেকর্ড করে রাখে ওরা। পরে সেই রেকর্ডিং শুনে পড়াশোনা ও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে। এরপর ব্রেইল পদ্ধতিতে নোট নিয়ে সেটা হাতের স্পর্শে পড়ে।
বড় হয়ে কী হতে চায় এই পড়ুয়ারা? নীহার জানাল, সে গায়িকা হতে চায়। তুহিন হতে চায় সাহিত্যিক। লক্ষ্মী, উত্তম ও আজিম শিক্ষকতা করতে চায়। আকাশের লক্ষ্য, সফল ব্যবসায়ী হয়ে স্বাবলম্বী হওয়া। অঞ্জলির ইচ্ছে প্রকৃত মানুষ হওয়া।
জেলা জনশিক্ষা আধিকারিক পিউ হালদার বলেন, এটা বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য জেলার একমাত্র সরকারপোষিত আবাসিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এখানকার ছাত্রছাত্রীরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে রেল, ব্যাঙ্ক, স্কুল সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরি পেয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের অনেকেরই সঙ্গীত, সাঁতার, দাবা, ক্রিকেট খেলা সহ অন্য প্রতিভা রয়েছে। - নিজস্ব চিত্র