জুনিয়র ডাক্তারের মৃত্যুর তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
বর্তমান | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সাড়ে তিন বছর আগে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে জুনিয়র চিকিৎসকের রহস্য মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০২১ সালের ১১ আগস্ট রাতে বর্ধমানে মেডিকেল কলেজের হস্টেলের পাশে শেখ মোবারক হোসেন নামে ওই জুনিয়র চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের দাবি ছিল, ছেলেকে খুন করা হয়েছে। এই অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় এবার পূর্ব বর্ধমানের পুলিস সুপারের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ।
মামলার বয়ান সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ১১ আগস্ট রাত আড়াইটা নাগাদ কর্তৃপক্ষের তরফে ওই জুনিয়র চিকিৎসকের বাবা শেখ হাফিজুল ইসলামকে ফোনে জানানো হয়, তাঁর ছেলেকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালের ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতালের পৌঁছনোর পর তাঁরা দেখেন ছেলে মারা গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করে বর্ধমান থানার পুলিস। তবে খুনের অভিযোগের কিনারা করতে পারেনি তারা। জুনিয়র চিকিৎসকের বাবার দাবি ছিল, কলেজেরই প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে ওই চিকিৎসকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ঘটনার আগে তাঁর ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে অস্বীকার করার পাশাপাশি ছেলেকে ব্ল্যাক মেল করছিল ওই ছাত্রী। অভিযোগ, ছেলের হস্টেল ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য শাসানিও দিচ্ছিল ওই ছাত্রী। মামলার বয়ানে চিকিৎসকের বাবার দাবি, ছেলে হস্টেল ছেড়ে চলে যেতে অস্বীকার করায় প্রেমিকাই ছেলেকে খুনের ছক কষেছিল। আর সে কারণেই ঘটনার আগের দিন তাঁর ছেলেকে সিনিয়র ডাক্তারদের হস্টেলে একটি পার্টিতে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানেই তাঁকে মারধর করে উপর থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই কারণে তদন্তের গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের দ্বারস্থ হন হাফিজুল। পুলিসের দাবি ছিল, তাঁরা সঠিক পথে তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়েছে। ঘটনাস্থলের স্কেচ ম্যাপ, ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি, থেকে শুরু করে অভিযুক্ত বান্ধবীর বয়ান রেকর্ড বা তাঁর মোবাইল সিজ করা থেকে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। পুলিসের রিপোর্ট দেখে ২০২২ সালে মামলা খারিজ করে দেয় বিচারপতি শম্পা সরকারের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন হাফিজুল। সেই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, বর্ধমনের পুলিস সুপারের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করে ঘটনার তদন্ত চালাতে হবে।