কৃষ্ণকুমার দাস: আসছে ছাব্বিশের বিধানসভা ভোট। ফের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় ফেরার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই লক্ষ্যে সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেছেন তিনি। দিয়েছেন একাধিক দাওয়াই। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে বারবার সতর্ক করলেও বিধানসভার পরিষদীয় দলের বৈঠকে একেবারে চাঁচাছোলা ভাষায় তিনি ভর্ৎসনা করলেন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া দলের বিধায়ক, জেলা সভাপতি-সহ দায়িত্বপ্রাপ্তদের। নিশানায় আসানসোল ও মালদহের চারজন। সকলের নাম করেই মমতা বললেন, ”তোমাদের ঝগড়ায় তো কান পাতা যাচ্ছে না। বাইরে এত কথা শুনছি তোমাদের ঝগড়া নিয়ে। এসব বন্ধ করো। কোনও গোষ্ঠীবাজি চলবে না।”
আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি ও পাণ্ডবেশ্বরে বিধায়ক নরেন চক্রবর্তীর বিস্তর গন্ডগোল। দলের নানা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে আকছার ঝামেলা বাঁধছে বলে জেলা স্তরে খবর। সেই খবর পৌঁছে গিয়েছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও। সোমবার পরিষদীয় দলের বৈঠকে বিধান উপাধ্যায়, নরেন চক্রবর্তীকে ডেকে তিনি ভর্ৎসনা করেন। বলেন, ”তোমাদের ঝগড়ায় তো কান পাতা দায়। এসব গোষ্ঠীবাজি চলবে না। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া থামাও।”
এর পাশাপাশি দলনেত্রীর নিশানায় মালদহের সাবিত্রী মিত্র ও জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সিও। তাঁদেরও নাম করে নেত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি, সমন্বয় রেখে, মিলেমিশে কাজ করতে হবে। উল্লেখ্য, দলীয় নেতাদের নিজেদের মধ্যে গোলমাল নতুন নয়। কিন্তু শীর্ষ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সুষ্ঠুভাবে সংগঠন চালানো এবং জনপরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করাই কাম্য। আর মমতা বারবার তা মনে করিয়ে দেন। বিশেষত নির্বাচনের সময় এই একতার সুফল পেয়েছে দল। কোথাও আবার গোষ্ঠী-কাঁটায় বিঁধে জয় হাতছাড়া হয়েছে শাসকদলের প্রার্থীদের। কিন্তু ছাব্বিশে তেমন কোনও ভুল করা চলবে না বলে কড়া বার্তা দলনেত্রীর। আর এখন থেকেই সে বিষয়ে কার্যত নজরদারি শুরু করছেন বলে স্পষ্ট করে দিলেন তিনি।