• আজও কানে বাজে বাবার সেইসব কথা, হারানোর শোক সামলে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসল মেয়ে
    ২৪ ঘন্টা | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • পার্থ চৌধুরী: বাবা চেয়েছিলেন, মেয়ে হাসিমুখে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যাক। তাই বাবার মৃত্যুর মাত্র ১১ দিনের মাথায় জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষায় বসেছে মেয়ে। বাবার মৃত্যুর শোক সামলে তাঁর স্বপ্নপূরণই এখন একমাত্র লক্ষ্য পূর্ব বর্ধমানের মেমারির প্রিয়া মাহাতোর। বাবার চলে যাওয়ার কষ্ট এখনো তাজা, শেষ হয়নি পারলৌকিক কাজও। তবু বাবার ইচ্ছে বাস্তবায়ন করতে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই লালপাড় সাদা শাড়িতে হাজির  সে।

    পূর্ব বর্ধমান জেলার,মেমারি থানার বৈদ্যডাঙ্গা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে চোখে পড়ল এক আবেগঘন দৃশ্য। পরীক্ষার হলে প্রবেশ করছে প্রিয়া মাহাতো—যে কয়েকদিন আগেই হারিয়েছে তার সবচেয়ে বড় শক্তির উৎস, তার বাবা রাজু মাহাতোকে। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তিনি। বাবার অনুপস্থিতিতে প্রিয়ার পরিবারের জন্য নেমে আসে এক গভীর শোকের ছায়া। কিন্তু বাবাই ছিলেন তার বড় অনুপ্রেরণা। বাবার স্বপ্ন ছিল, মেয়ে যেন পড়াশোনায় মনোযোগী থাকে, ভালো ফল করে এগিয়ে যায় জীবনে। সেই স্বপ্নই পূরণ করতে বাবার শোকে মুহ্যমান হয়েও পরীক্ষা দিতে বসেছে প্রিয়া। বাবার শেষ ইচ্ছে পূরণের সংকল্পে সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

    পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত শিক্ষক, সহপাঠী, ও স্থানীয়রা প্রিয়ার এই মানসিক দৃঢ়তা দেখে বিস্মিত ও গর্বিত। তার বন্ধুরাও তাকে সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। সবার একটাই আশা—প্রিয়া ভালো ফল করবে এবং বাবার স্বপ্নপূরণ করতে পারবে। প্রিয়া জানাল, বাবা চেয়েছিলেন আমি যেন যে কোন অবস্থাতেই পরীক্ষা দিই। তাই এই লড়াই আমাকে লড়তেই হবে। বান্ধবী অনিতা রায় জানায়, এই ঘটনা তাদের সবার কাছে প্রেরণা।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)