নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: নিস্তব্ধ ভোররাত। শুনসান রাস্তা। সামনেই রক্ষীবিহীন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার। আশপাশে পুলিসের টহলরত কোনও ভ্যান দেখা যাচ্ছে না। আচমকাই সেই এটিএম কাউন্টারের সামনে এসে দাঁড়াল কালো রঙের একটি গাড়ি। নামল চার দুষ্কৃতী। সঙ্গে গ্যাস কাটার। দ্রুত ভিতরে ঢুকে গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে ফেলা হল এটিএম মেশিন। কেউ কিছু টের পাওয়ার আগেই প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা লুট করে চম্পট দিল দুষ্কৃতী দলটি। ততক্ষণে আগুন লেগে গিয়েছে এটিএমে। শনিবার কাকভোরে দুঃসাহসিক এটিএম লুটের ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ায়, সাঁকরাইলে আলমপুরের আন্দুল রোডে। গোটা ঘটনার নেপথ্যে কুখ্যাত হরিয়ানা গ্যাং জড়িত বলে পুলিস সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই জাতীয় সড়কের পাশ থেকে দুষ্কৃতীদের ব্যবহৃত গাড়ি ও এটিএম মেশিন ভাঙার একাধিক সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছে তদন্তকারীরা। হাওড়ার পুলিস কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী বলেন, এটিএম লুটের ঘটনায় গাড়ি ও গ্যাস কাটার বাজেয়াপ্ত হয়েছে। শীঘ্রই দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে।
জানা গিয়েছে, এদিন ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে গাড়ি নিয়ে আন্দুল রোডের দিকে ঢোকে ওই চারজন দুষ্কৃতী। আলমপুরের ওই এটিএম কাউন্টারে কোনও প্রহরী না থাকার সুযোগ নেয় তারা। দুষ্কৃতীদের কাছে ছিল লোহার ভারী রড, গ্যাস কাটার সহ একাধিক সরঞ্জাম। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে সেগুলি দিয়ে এটিএম মেশিন ভেঙে ভেতরে থাকা প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা লুট করে তারা। গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম মেশিন ভাঙার সময় কোনওভাবে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ধরে যায় সেখানে। ততক্ষণে অবশ্য সর্বস্ব নিয়ে চম্পট দেয় দলটি। আলো ফুটতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সাঁকরাইল থানার পুলিস ও হাওড়া সিটি পুলিসের গোয়েন্দারা। আন্দুল রোড ও জাতীয় সড়কের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দুষ্কৃতীদের গাড়ির নম্বর প্লেট চিহ্নিত করা হয়। এরপর আন্দুল রোড থেকে বেশ কিছুটা দূরে ধূলাগড়ের পুরনো চৌরাস্তার কাছে জাতীয় সড়কের পাশে খোঁজ মেলে গাড়িটির। সেখান থেকেই উদ্ধার হয়েছে এটিএম লুটে ব্যবহৃত গ্যাস কাটার সহ বিভিন্ন সামগ্রী। পুলিস সূত্রে খবর, গত শুক্রবার রাতে ডোমজুড়ের নিউ কোলোরা এলাকার এক ব্যক্তির গ্যারেজ থেকে গাড়িটি চুরি গিয়েছিল। তিনি এব্যাপারে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছিলেন। গোয়েন্দাদের অনুমান, অপারেশন শেষ করে চুরি করা গাড়িটি জাতীয় সড়কেই ফেলে রেখে ভিনরাজ্যের উদ্দেশ্যে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। পুলিস সূত্রে খবর, জাতীয় সড়ক সংলগ্ন বিভিন্ন শুনসান রাস্তায় থাকা প্রহরীবিহীন এটিএম কাউন্টারগুলোকে টার্গেট করে কুখ্যাত এই হরিয়ানা গ্যাং।