নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দু’বার এটিএমে প্রবেশ, দু’বার বের হওয়া। ঢোকা আর বের হওয়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান মাত্র আধঘণ্টা। অরক্ষিত এটিএমে এরমধ্যেই হয়েছে যাবতীয় কারসাজি। কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামের কাছে বরাখোলায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে টাকা উধাওয়ের ঘটনার তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল কলকাতা পুলিস। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী, রাত সোয়া ৯টা নাগাদ ওই এটিএমে প্রবেশ করে এক যুবক। তাঁর মাথায় কালো টুপি ছিল। মুখ ঢাকা ছিল কালো মাস্কে। এটিএম মেশিনে কারসাজি সারার পর কাছেই অপেক্ষা করছিল সে। অভিযোগকারী ফাঁদে পড়ার পর ফের আরেকবার এটিএমে ঢুকে ডেবিট কার্ডটি হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় সে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিস। ঘটনার তদন্তভার নিয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার আধিকারিকরা। লালবাজার সূত্রে খবর, গোটা শহরে রক্ষীহীন এটিএম কাউন্টারগুলির তালিকা চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে সার্ভে পার্ক থানা এলাকার ওই এটিএমে টাকা তুলতে যান এক ব্যক্তি। ডেবিট কার্ড নির্দিষ্ট স্লটে ঢোকালে সেটি আটকে যায়, টাকা বের হয়নি। এরপরেই মেশিনে লাগানো একটি কাস্টমার কেয়ার নম্বরে ফোন করেন ওই গ্রাহক। তাতে ফোনের ওপার থেকে জানতে চাওয়া হয় গ্রাহকের ডেবিট কার্ড নম্বর, সিভিভি নম্বর ও পিন। এরপরেই ২৫ হাজার টাকা ডেবিট মেসেজ পান ওই গ্রাহক। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে সার্ভে পার্ক থানার দ্বারস্থ হন তিনি। তদন্তে নেমে পুলিস আগে এটিএমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। দেখা যায়, এটিএমে ঢুকে টুপি-মাস্ক পরা যুবক কার্ড ঢোকানোর স্লটে একটি টেপ লাগিয়ে দিচ্ছে। তাতেই আটকে যায় গ্রাহকের কার্ড। একইসঙ্গে, ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ার নম্বরের জায়গায় একটি ভুয়ো নম্বর সেঁটে দেয়। এরপরেই যুবক থানায় যাওয়ার জন্য বেরনোর পরই ফের এটিএমে ঢোকে অভিযুক্ত। গ্রাহকের আটকে যাওয়া ডেবিট কার্ডটি বের করে নিয়ে চম্পট দেয় সে। এরপরে আরও একটি মেসেজ পান গ্রাহক। তাতে আরও ৮০ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায়। ডিসি (ইস্ট) অরিশ বিলাল বলেন, যে ভুয়ো নম্বরটি সাঁটা হয়েছিল, সেটি বন্ধ রয়েছে। তথাকথিত হেল্পলাইন নম্বরে প্রতারিতের সঙ্গে কথা বলা ব্যক্তি পুরুষ না মহিলা? তা জানা হচ্ছে। অন্যদিকে, লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও শহরের বহু এটিএম নিরাপত্তারক্ষী বিহীন অবস্থায় পড়ে থাকে। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির তরফে পূর্ণাঙ্গ তালিকা স্থানীয় থানায় জমা দেওয়া হয় না। সেই সমস্ত তালিকা চাওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকেই স্থানীয় থানা ওই এটিএমগুলিতে বিশেষ নজরদারি চালাবে। -নিজস্ব চিত্র