• পরিচিত কেউ লুটের ঘটনায় যুক্ত, দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ কেয়ারটেকার-পরিচারিকাকে
    বর্তমান | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও, একাকী বৃদ্ধার বাড়িতে লুটের ঘটনার রহস্যের জট কাটল না। উল্টে আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বড়তলা থানা এলাকার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের ওই বাড়ির পরিচিত কোনও ব্যক্তি গয়না ও নগদ মিলিয়ে ৩০ লক্ষের সামগ্রী লুটের ঘটনার মাস্টারমাইন্ড, প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই দাবি পুলিসের। সন্দেহভাজনের তালিকায় রয়েছে, বাড়ির দুই কেয়ারটেকার ও এক পরিচারিকা। শনিবার দিনভর চলে জেরা। তাঁদের মোবাইল ফোনে আসা শেষ তিনদিনের কল রেকর্ডস খতিয়ে দেখছে বড়তলা থানার পুলিস। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি তদন্তকারীরা। 


    পুলিস সূত্রের খবর, জেরার মুখে এক কেয়ারটেকার জানায়, দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখায়। তার জেরে খাটের তলায় লুকিয়ে পড়েন তিনি। সেক্ষেত্রে লুটপাটের পর দুষ্কৃতীরা চম্পট দেওয়ার সময় সে চিৎকার করল না কেন? এখানেই পুলিসের মনে প্রথম খটকা। দ্বিতীয়ত, বৃদ্ধাকে মারধর করা হলেও, দুই কেয়ারটেকার ও পরিচারিকার গায়ে একটি আঁচড়ও নেই। কেন? তাহলে কি দুষ্কৃতীরা তাদের পরিচিত? এই দুই খটকার সূত্র ধরেই কেস সমাধানের চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তিন সন্দেহভাজনের কল ডিটেলস রেকর্ডস থেকে পুলিস জানতে পেরেছে, গত কয়েকদিনে একাধিক নম্বর থেকে ফোন এসেছে তাদের কাছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই সব ইনকামিং কলগুলি একই। অর্থাৎ, একই ফোন থেকে পরিচারিকা ও কেয়ারটেকার দু’জনের কাছেই ফোন এসেছে। সেই সন্দেহজনক নম্বরের সঙ্গে সন্দেহভাজনদের কী যোগসূত্র রয়েছে? ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদে উত্তর খুঁজছে পুলিস। সেই নম্বরগুলিই বা কাদের? বেশ কিছু ফোন নম্বরের মালিককে শনিবার বড়তলা থানায় ডেকে পাঠানো হয়। তাদের জেরা করা হয়। কিন্তু, এদিন রাত পর্যন্ত কোনও ‘ব্রেক-থ্রু’ পাননি তদন্তকারীরা। 


    পুলিসের একটি বিশেষ সূত্র জানাচ্ছে, যারা লুটপাট চালায়, তারা ওই বাড়িতে আগেও এসেছে। ঘটনার সময় দুষ্কৃতীদের চিনে ফেলেন বৃদ্ধা। তার জেরে প্রবীণ মহিলাকে মারধর করা হয়ে বলে অনুমান পুলিসের। এই ঘটনায় পুলিস কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা বলেন, পার্ক সার্কাসের শপিং মল, নারকেলডাঙায় টাকা লুট সহ একাধিক ঘটনায় দেখা গিয়েছে, ভিতরের কেউ টাকা-পয়সার তথ্য দুষ্কৃতীদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। বড়তলাতেও একই ঘটনা ঘটেছে। ওখানে মোট ছ’টি ফ্ল্যাট ছিল। কিন্তু, নির্দিষ্টভাবে ওই বৃদ্ধার বাড়িতেই ঘটনাটি ঘটেছে। অর্থাৎ, ভিতরের কেউ যে যুক্ত, তা নিশ্চিত।
  • Link to this news (বর্তমান)