• নলহাটিতে রেললাইন বরাবর রাস্তা তৈরিতে উদ্যোগী রেল
    বর্তমান | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বহু বছর পর সাংসদ শতাব্দী রায়ের প্রচেষ্টায় মিলল পাকা রাস্তা। রবিবার এলাকায় এসে সংবর্ধনায় ভাসলেন সাংসদ। ভোটপ্রচারে এসে নলহাটি-২ ব্লকের গোকুলপুর গ্রামের বেহাল রাস্তা নিয়েও এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সাংসদ তহবিলের দশ লক্ষ টাকায় সেই রাস্তাও ঢালাই হয়েছে। এদিন রাস্তার উদ্বোধনে এসে একইভাবে জনজোয়ারে ভাসলেন সাংসদ। মানুষের ভালোবাসা, উচ্ছ্বাস দেখে আপ্লুত শতাব্দী রায় বলেন, মানুষের জন্য কাজ করতে পারার আনন্দটাই আলাদা। 


    নলহাটি-২ ব্লকের কুমারসান্ডা, শালিসাণ্ডা সহ আশপাশের ১৬টি গ্রামের মানুষজন রেললাইনের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তা ধরে লোহাপুর আসেন। ব্লক অফিস, বাজারহাট, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সরকারি কার্যালয় সবই লোহাপুরে হওয়ায় নিত্যদিন তাঁদের যাতায়াত করতে হয়। বহুবার রাস্তা পাকা করার দাবিতে আন্দোলন থেকে পালস পোলিও বয়টক করেও ফল পাননি গ্রামের বাসিন্দারা। রাস্তা এতটাই বেহাল যে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত আসতে চায় না। রোগী ও গর্ভবতী মহিলাদের হাঁটিয়ে লোহাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হয়।  কাছাকাছি লোহাপুর স্টেশনে এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়ায় না। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে কোনওভাবে মোড়গ্রামে পৌঁছে সেই ট্রেন ধরতে হয়। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকেও রাস্তাটি সংস্কার চেয়ে রেলকে চিঠি দিলেও উত্তর মেলেনি। মাস পাঁচেক আগে লোকসভায় এই এলাকার মানুষের দুর্দশা তুলে ধরে রাস্তাটি সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার হন শতাব্দী। এরপর গত ডিসেম্বর থেকে সাত কিমি পিচরাস্তা করার কাজ শুরু করেছে রেল। দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটতে চলায় সাংসদকে ধন্যবাদ জানাতে কুমারসাণ্ডা গ্রামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন গ্রামবাসী ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন সকালে সাড়ে ১১টায় সেখানে শতাব্দী পৌঁছতেই পুষ্পবৃষ্টি শুরু হয়। মঞ্চে সাংসদের হাতে মানপত্র, পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধনা জানান তাঁরা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এলাকার প্রবীণ বাসিন্দারা।


    গ্রামের বাসিন্দা কুমার শেখ, পলাশ শেখ, লাল মহম্মদরা বলেন, রাস্তাটি পাকা করার দাবিতে গ্রামবাসীরা মিলে অনেক লড়াই, আন্দোলন করেছি। কিন্তু রেল গুরুত্ব দেয়নি। লোকসভা ভোটের সময় প্রচারে এলে শতাব্দী রায়কে সমস্যার কথা বলি। তিনি চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেইমতো লোকসভার অধিবেশনে রাস্তাটি পাকা করে দেওয়ার জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন। অবশেষে রেল রাস্তাটি পাকা করার কাজ শুরু করেছে। সাংসদের প্রতি কতৃজ্ঞতা জানাতেই এই অনুষ্ঠান। বক্তব্য রাখতে গিয়ে শতাব্দী বলেন, আপনারা আমার প্রতি বিশ্বাস রেখে ভোট দিয়েছিলেন। তারজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। 


    এই ব্লকের গোকুলপুর গ্রামের ভিতর প্রায় ৩৫০মিটার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় ছিল। বর্ষার সময় এক হাঁটু কাঁদা পেরিয়ে চলাচল করতে হয় পড়ুয়া থেকে গ্রামবাসীদের। ভোটপ্রচারে এসে শতাব্দীকে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল। এই রাস্তাটিও পাকা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি সাংসদ তহবিল থেকে ১০লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। সেইমতো রাস্তাটি ঢালাই হয়েছে। এদিন সেই রাস্তার উদ্বোধনে এসে গ্রামবাসীদের উচ্ছ্বাসে ভাসলেন সাংসদ। গ্রামবাসী সুজাতা মার্জিত, লক্ষ্মী মার্জিতরা বলেন, সাংসদ কথা দিয়ে কথা রাখায় আমরা খুশি। ভবিষ্যতেও যেন উনি এভাবে আমাদের পাশে থাকেন। শতাব্দী বলেন, মানুষের হয়ে কাজ করে যেতে চাই।
  • Link to this news (বর্তমান)