• মানবাজার হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের দোকানে বেশিরভাগ ওষুধ মেলে না
    বর্তমান | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানবাজার: ওষুধের কালোবাজারি রুখতে সরকারি হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খুলেছে রাজ্য সরকার। সেইমতো মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালেও বছরখানেক আগে খোলা হয়েছে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান। কিন্তু, ওই দোকানে বেশিরভাগ ওষুধই পাওয়া যায় না। এমনকি ওষুধ কিনলে তার বিল পর্যন্ত দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 


    মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের সামনেই রয়েছে ওই ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান। দোকানের ওপরে বড় বড় অক্ষরে লেখা আছে ৫২ শতাংশ ছাড় ওষুধের এমআরপির উপর। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ নামেই ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান। ওই দোকানে মেলে না প্রয়োজনীয় ওষুধ। কিছু ওষুধ পাওয়া গেলেও তা কিনলে বিল দেওয়া হয় না। সেজন্য অনেকেই বুঝতে পারেন না ঠিক কত শতাংশ ছাড় দেওয়া হল। প্রয়োজনীয় ওষুধ না মেলায় রোগীর পরিবার বাধ্য হয়ে বাইরে থেকেই ওষুধ কিনছেন। রোগী সহ তাদের পরিজনদের অভিযোগ, ডাক্তারবাবুর লেখা কাগজ দেখালেই বলা হয় সব ওষুধ এই দোকানে নেই। দু’একটি ছাড়া বাকি ওষুধ বাইরের দোকান থেকেই কিনতে হচ্ছে। 


    ছেলের জ্বর হওয়ায় হাসপাতালে দেখাতে এসেছিলেন রঞ্জিত বাউরি। হাসপাতালের আউটডোরে ডাক্তার দেখিয়ে প্রেসক্রিপশন নিয়ে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকানে যান। কাগজ হাতে নিয়েই দোকানের কর্মী জানান পাঁচটি ওষুধ লেখা আছে তার মধ্যে একটি মাত্র পাওয়া যাবে। বাকি বাইরে থেকে কিনতে হবে। এমনই অভিযোগ অন্যান্যদেরও। ওই ওষুধের দোকানের কর্মী জানান, এখানে ডাক্তারবাবুরা যে ওষুধ লেখেন তার সব থাকে না। ওই কম্পোজিশনের অন্য ওষুধ দিতে চাইলে অনেকেই তা নেন না। আর বিল না দেওয়ার প্রসঙ্গে. বলেন প্রিন্টার নেই তাই বিল দেওয়া যায় না। তবে ছাড় দেওয়া হয়।


    হাসপাতাল সূত্রের জানা গিয়েছে, ন্যায্য মূল্যের দোকানে ১৪২ ধরনের ওষুধ থাকার কথা। কিন্তু ওই দোকানে শুধু ৪২ ধরনের ওষুধও নেই বলে অভিযোগ। এমনকী জরুরি স্যালাইনও পাওয়া যায় না। নিয়ম অনুযায়ী ওষুধের দোকানে একজন ফার্মাসিস্ট থাকার কথা। কিন্তু, এখানে দোকান চালান একজন যুবক। স্থানীয়দের দাবি ওই ঠিকাদার সংস্থাকে বাতিল করে নতুন টেন্ডার ডাকা হোক।


    মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ জিৎ সরকার জানান, ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আছে। সাধারণত জ্বর সর্দি কাশিরও ওষুধ সেখানে পাওয়া যায় না। হাসপাতালে যারা চিকিৎসা করাতে আসছেন তাদের বাইরে থেকে বেশি দাম দিয়ে ওষুধ কিনতে হয়। এতে সাধারণ মানুষ সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ওই দোকানে ফার্মাসিস্ট পর্যন্ত নেই। হাসপাতালে ওই দোকানের সঙ্গে চুক্তিপত্রেরও কোনও কাগজ নেই। বিষয়টি স্বাস্থ্য দপ্তরে জানিয়েছি। এ বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, ওই দোকান বাতিল করার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরে জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)