• গর্ভেই মৃত্যু শিশুর, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে বিক্ষোভ
    বর্তমান | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: গর্ভস্থ অবস্থাতেই শিশুর মৃত্যু। ঘটনা শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। এই ঘটনায় জেলা হাসপাতালের চিকিত্সকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। গর্ভে সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে রবিবার হাসপাতাল চত্বরে এসে ক্ষোভ উগরে দেয় পরিবারের লোকজন। এতে সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায়। প্রসূতির পরিবার সেই চিকিত্সকের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নালিশও জানিয়েছে। 


    শিলিগুড়ি শহরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোগোমালির বাসিন্দা মোহন দাস তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা দাসকে শনিবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানেই সুমিত্রার চিকিৎসা চলছিল। রবিবার তাঁর সিজার হওয়ার কথা ছিল। গর্ভস্থ সন্তান সুস্থ স্বাভাবিক আছে বলে এদিন সকাল থেকে মোহনবাবুর পরিবারকে জানান চিকিৎসকরা। কিন্তু বেলা ১২টা নাগাদ আচমকা সুমিত্রাকে স্যালাইন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর মোহনবাবু ও তাঁর পরিবারকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, শিশুটি গর্ভেই মারা গিয়েছে। অস্ত্রোপচার করে মৃত শিশুকে সুমিত্রা দাসের গর্ভ থেকে বের করা হবে। খবর পেয়ে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যান মোহনবাবু ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আচমকা এমন ঘটনা কীভাবে ঘটল, জানতে চাইলে চিকিত্সকরা কোনও সদুত্তর দেননি বলে তাঁদের অভিযোগ। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের লোকেরা। উত্তেজনা তৈরি হয়।  পরে শিলিগুড়ি থানা থেকে পুলিস আসে। কী হয়েছে তা জানতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিলে শান্ত হন প্রসূতির পরিবারের সদস্যরা। 


    এই ব্যাপারে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ চন্দন ঘোষ বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ জমা পড়লে অবশ্যই খতিয়ে দেখব। কীভাবে এমন ঘটনা ঘটেছে, আমরা নিজেদের মতো করে খোঁজ করে দেখছি। 


    সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই তাকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েন মোহন দাস। বলেন, আমরা চিকিৎসক-নার্সদের কাছে বারবার জানতে চেয়েছিলাম কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল। আমাদের কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি। সুস্থ স্বাভাবিক স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলাম। আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারলাম না। তাঁর আরও অভিযোগ, ২ ফেব্রুয়ারি প্রসবের দিনক্ষণ ঠিক করেছিলেন হাসপাতালের চিকিৎসক। কিন্তু সেদিন হাসপাতালে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছিল। এরপর আরও একদিন আসতে বলা হয়েছিল। তবে সেদিনও প্রসব করানো হয়নি। ১৫ ফেব্রুয়ারি শেষ পর্যন্ত প্রসব বেদনা ওঠার পর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে হাসপাতালে ভর্তির পরও সেইভাবে ভালো চিকিৎসা হয়নি। স্ত্রী ও সন্তান কেমন রয়েছে বারবার জিজ্ঞেস করলেও বলা হয়েছিল সব ঠিক আছে। আমার প্রশ্ন, সবকিছু যদি ঠিকই থাকে তাহলে এমন ঘটনা ঘটল কেন। কিছুক্ষণ আগেও চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা সুস্থ সন্তান জন্ম হবে বলে আশ্বাস দিলেও কেন পরে আচমকা তৎপর হয়ে ওঠে স্ত্রী’কে স্যালাইন দিয়েছিল? গোটা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছি পুলিস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)