‘আমি খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি’, রিক্সা চালিয়ে বিধানসভা যাত্রা মনোরঞ্জন ব্যাপারির
প্রতিদিন | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: নানা সময়ে তাঁর নানা মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সরাসরি দলের সমালোচনা না করলেও নিজের কাজকর্মের কথা বারবার প্রকাশ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি অন্যদের চেয়ে কিছুটা আলাদা। বলাগড়ের সেই তৃণমূল বিধায়ক তথা দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মনোরঞ্জন ব্যাপারি এবার রিক্সা চালিয়ে বিধানসভা যাত্রা করলেন। মঙ্গলবার সকালে ৯টা নাগাদ কিড স্ট্রিটের এমএলএ হস্টেল থেকে প্যাডেলে পা রেখে শুরু হল তাঁর যাত্রা। খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। এই যাত্রার আগে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট মনোরঞ্জন ব্যাপারি এনিয়ে নিজের মতামত খোলাখুলি প্রকাশ করলেন। তাতে মিশে সূক্ষ্ম খোঁচাও।
কেন হঠাৎ এই রিকশাযাত্রা মনোরঞ্জন ব্যাপারির? তার জবাব ফেসবুক পোস্টেই দিয়েছেন তৃণমূল বলাগড়ের বিধায়ক। ২০২১ সালে যখন বিধানসভা ভোটে জিতে বলাগড় থেকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা, তখন তাঁর এলাকা থেকে স্লোগান উঠেছিল ? ‘রিক্সা যাবে বিধানসভায়’। খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁকে বিধানসভায় দেখতে চেয়েছিলেন এলাকাবাসী। তা নিয়ে পোস্টে বিধায়ক লিখেছেন ? ‘এক রিকশাচালক সম্মানীয় বিধানসভার সদস্য হিসেবে বিধানসভায় এসেছেন। কিন্তু সরাসরি রিকশা বিধানসভায় আসেনি। আসতে পারেনি। কারণ, কলকাতা শহরে প্যাডেল রিকশা চলে না।’ ওয়াকিবহাল মহলের মত, তাঁর এই পোস্টে সূক্ষ্ম খোঁচা রয়েছে গ্রামবাংলার সংস্কৃতির প্রতি কলকাতার নাগরিকদের পরোক্ষ অবজ্ঞা নিয়ে।
তবে চার বছর পর বিধানসভায় রিকশা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি মিলেছে। তাই মঙ্গলবার তিনি নিজে প্যাডেল করে পৌঁছন বিধানসভায়। এ শহরের রাস্তায় চারচাকার দাপটের মাঝে আজ দেখা গেল অন্যরকম ছবি। রাজপথে রিকশা চালাচ্ছেন এক বিধায়ক। আসলে এটাই তাঁর প্রকৃত সত্ত্বা। এমনিতেই বিধায়ক হয়েও মনোরঞ্জন ব্যাপারির সাদামাটা জীবনযাপন অনেকের কাছেই চর্চার বিষয়। শুধু মুখেই নয়, কাজেও যে তিনি শ্রমজীবী মানুষেরই প্রতিনিধি, তাও এদিন বুঝিয়ে দিলেন বাংলার সংস্কৃতি জগতের অন্যতম বিশিষ্টজন।