অবশেষে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবিকে মান্যতা দিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকার স্বীকার করল বাংলার বেকারত্বের সমস্যার হার গোটা দেশের থেকে তুলনামূলকভাবে কম। নরেন্দ্র মোদী সরকারের রিপোর্ট বলছে, সারা দেশে বেকারত্বের সমস্যা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করলেও পশ্চিমবঙ্গ সেদিক থেকে অনেকটাই ভালো জায়গায় অবস্থান করছে।
কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যন ও কর্মসূচি রূপায়ণ মন্ত্রকের ‘পিরিওডিক লেবার ফোর্স সার্ভে’র ত্রৈমাসিক রিপোর্ট, অক্টোবর–ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে, জাতীয় বেকারত্বের হার ৬.৪ শতাংশ, যেখানে বাংলায় এই হার ৫.৭ শতাংশ। অর্থাৎ অনেকটাই কম। শহুরে পুরুষদের বেকারত্বের জাতীয় হার ৫.৮ শতাংশ, বাংলায় তা ৫.৪ শতাংশ। আবার শহর এলাকার মহিলাদের বেকারত্বের জাতীয় হার যেখানে ৮.১ শতাংশ, সেখানে বাংলায় তা অনেকটাই কম, ৬.৪ শতাংশ।
শুধু শেষ ত্রৈমাসিকই নয়, ২০২৩ সাল থেকে প্রতিটি ত্রৈমাসিক রিপোর্টেই শহুরে বেকারত্বের ক্ষেত্রে বাংলার হার জাতীয় হারের তুলনায় অনেকটাই কম বলে দেখা গিয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশ পাওয়ার পর রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘আমরা তো বারবারই বলছি, জাতীয় স্তরে বেকারির হার বেড়েছে, কিন্তু বাংলায় কমেছে। জাতীয় স্তরের তুলনায় বাংলার বেকারত্ব ৪০ শতাংশ কমেছে। এতদিন বাংলার দাবি মেনে না নিলেও এখন কেন্দ্রীয় রিপোর্ট তা স্বীকার করল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি রিপোর্টটি শহুরে বেকারত্বের হারের উপর হলেও আগামী দিনে গ্রামীণ ক্ষেত্রে বা সার্বিক বেকারত্বের হার নিয়ে কেন্দ্র যে রিপোর্ট প্রকাশ করবে, সেখানেও বাংলা এগিয়েই থাকবে।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগেই বাংলা নিয়ে সংসদের বাজেট অধিবেশনে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। অথচ বেকারত্বের নিরিখে বাংলা দেখিয়ে দিল জাতীয় গড় তো বটেই, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির থেকে অনেক নিচে রয়েছে এখানকার বেকারত্বের সমস্যা।
রিপোর্ট বলছে, দেশের যে ১১টি রাজ্য— উত্তরপ্রদেশ, বিহার, অসম, রাজস্থান, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, উত্তরাখণ্ডের পাশাপাশি কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ এবং সবার আগে জম্মু-কাশ্মীরে শহুরে বেকারত্বের হার জাতীয় হারের তুলনায় বেশি, তাদের অধিকাংশই বিজেপি-শাসিত রাজ্য। অন্যদিকে, যে সমস্ত রাজ্যগুলির শহুরে বেকারত্বের হার জাতীয় হারের তুলনায় কম, সেগুলি হলো বাংলা-সহ পাঞ্জাব, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, দিল্লি। দেশের ২২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লি ও জম্মু-কাশ্মীরকে এই সমীক্ষার আওতাতে রাখা হয়েছিল।