রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে সওয়াল করছিলেন তৃণমূল সাংসদ। সেই সময় তিনি বলেন, 'রত্না চট্টোপাধ্যায় বছরের পর বছর নাটক করে যাচ্ছেন।' শোভনের পক্ষে সওয়াল করে কল্যাণ বলেন, 'আমরা যে সমাজে বাস করি, আমরা জানি। ভাইয়েদের সঙ্গে যেমন ভালো সম্পর্ক থাকে, তেমন খারাপ সম্পর্কও থাকে। ওনার অবৈধ সম্পর্ক আছে।'
রত্না চট্টোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ডিভোর্স মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট ৩ মার্চ পর্যন্ত নিম্ন আদালতের শুনানি স্থগিত রেখেছে। রত্না চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন নিম্ন আদালত এই মামলায় তাঁর দেওয়া সাক্ষীদের বয়ান নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এই দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রত্না চ্যাটার্জি। সেই আবেদনের বিষয় শুনানির পর রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্য। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এই বিষয়ে নির্দেশ দেবেন বিচারপতি ভট্টাচার্য।
শুনানিতে রত্নার আইনজীবী রঞ্জন বাচাওয়াত জানান, 'শোভনের অভিযোগ রত্নার তাঁরই তুতো ভাইয়ের সঙ্গে নাকি অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। নিম্ন আদালতে আমার মক্কেল নাকি ঠিকঠাক হাজিরা দিচ্ছেন না। কিন্তু সেই অভিযোগ তো শোভনের বিরুদ্ধেও করা যায়।' একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, 'গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের নিম্ন আদালতে হাজির করা হচ্ছে না। শোভন প্রভাবশালী।'
এর পাল্টা শোভনের পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কে প্রভাবশালী? প্রভাবশালী তো রত্না চট্টোপাধ্যায়। তিনি শাসক দলের এমএলএ। তিনি কার বিরুদ্ধে প্রভাবশালীর অভিযোগ আনছেন? অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন। সেসব ভাষা মুখে উচ্চারণও করা যায় না। তিনি একজন বিধায়ক। গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট করেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়।'
২০১৭ সালে ডিভোর্সের মামলা ফাইল হওয়ার পর থেকেই রত্নার অনুপস্থিতির কারণে বারবার শুনানি পিছিয়েছে। ২০১৮ সালে তিনি খোরপোষের আবেদন করেন এবং ৪০ হাজার টাকা মেয়ের খরচ বাবদ পান। এরপর থেকে এই মামলায় তিনি অনুপস্থিত।
রত্না চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী এদিন বলেন, 'আইনের বিভিন্ন ধারা উপধারা দেখিয়ে বিচ্ছেদের পক্ষে যুক্তি দেওয়ার কিছু নেই। আমরা ইংল্যান্ডে থাকি না। এটা আবেগ অনুভূতির বিষয়। ২০-২৫ বছর একসঙ্গে থাকার পর হঠাৎ মনে হল -যাও, আর দরকার নেই! এটা এখানে এখনও অন্তত হয় না।'