‘কী এমন হল যে বাচ্চা মেয়েটাকেও ছাড়ল না?’ ট্যাংরাকাণ্ডে আতঙ্কিত পড়শি শিপ্রা
হিন্দুস্তান টাইমস | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Kolkata Tangra Case Update:দেখা হলেই মুখে মিষ্টি হাসি। বাড়িতে পুজোপার্বণ থাকলে ডাক পড়ত। গেলে যত্ন আত্তি করত দুই বউ। আর বাচ্চা মেয়েটা ‘খুব পিসি পিসি করত’। এ হেন সুখী-সুখী দেখতে পরিবারটা যে হঠাৎ এমন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারে, তা ভাবতেই পারছেন না শিপ্রা দাস। ২১, অতুল সুর রোডের বাসিন্দা শিপ্রা দাস দে বাড়ির ঠিক পাশের ফ্ল্যাটেই থাকেন। ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে তাঁর পরিবার। ২৫ বছর ধরে ওই পাড়ার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে দে পরিবারের তিন প্রজন্মকেই দেখেছেন মধ্যবয়স্কা।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে শিপ্রা জানান, ‘ওঁদের মা-বাবা দুজনেই ভীষণ ভালো ছিলেন। আমাকে পিসেমশাই সবাই লক্ষ্মী বলে ডাকত। বাড়িতে ওটাই ছিল ওঁর ডাকনাম। তিনিও বেঁচে থাকতে ভীষণ স্নেহ করতেন আমাকে।’
দুই ভাইকে তরুণ অবস্থা থেকেই দেখছেন শিপ্রা। বিয়ে থেকে সন্তান হওয়া — সব ঘটনারই সাক্ষী ছিলেন প্রতিবেশী হিসেবে। শিপ্রার কথায়, ‘দুই ভাইয়ের ব্যবহার বেশ ভালো। কিন্তু তারাই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে! বউদের ব্যবহারও ভীষণ ভালো ছিল। বড় বউ খুব অমায়িক ছিল। আমি গেলে জল, মিষ্টি দিয়ে যত্ন আত্তি করত। পুজোর সময় একা হাতে সব করত।’
ছোট্ট মেয়েটির কথা উঠতেই গলার স্বর আর্দ্র হয়ে উঠল শিপ্রার। তার নিজেরও প্রায় সমবয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। শিপ্রার কথায়,‘ওদের বাড়ি গেলেই মেয়েটা খুব পিসি পিসি করত। আমার সঙ্গে গল্প করত। কী এমন ঘটে গেল যে মেয়েটাকেও ছাড়ল না! মেয়েটাকেও প্রাণ দিতে হল?’ প্রশ্ন শিপ্রার।
ট্যাংরার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বারবার উঠে আসছে একটাই প্রশ্ন। কেন এই ঘটনা ঘটাতে হল? দুই ভাই অবশ্য প্রাথমিক জেরায় বলেছেন, কোটি কোটি টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল তাদের। সেই টাকা মেটাতে পারবেন না জেনেই এই পথ বেছে নেন। ব্যবসা সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে কি পরিবারের কারও সঙ্গে কখনও আলোচনা হয়েছে? শিপ্রাদেবী জানাচ্ছেন, ‘ব্যবসা সংক্রান্ত কোনও বিষয়েই বাইরের কাউকে কিছু জানাত না ওরা। ওদের যে এত টাকার দেনা, সেটাও তাই জানতে পারিনি। এমনকি ওদের মধ্যে যে এমন দুর্ঘটনা ঘটানোর প্ল্যান চলছে তাও ঘুণাক্ষরে টের পাইনি।’
শুধু শিপ্রাদেবী নন, আশেপাশের অন্যান্য প্রতিবেশীদেরও একটাই বক্তব্য। কখনও ওদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে বলে শোনেননি কেউ। সবসময় দেখা হলেই হাসি মুখ। কিন্তু সুখী দেখতে পরিবার যে এভাবে তছনছ হয়ে গেল, তা মনে পড়লেই আতঙ্কিত বোধ করছেন শিপ্রা দাস।