সংবাদদাতা, সাঁইথিয়া: প্রশাসনিক নির্দেশিকাই সার! বছর পার হলেও ময়ূরাক্ষী নদীর উপর সিউড়ির তিলপাড়ার বেহাল ব্রিজ সংস্কারের কোনও উদ্যোগই নেয়নি প্রশাসন। অস্থায়ী কজওয়ে নির্মাণ করে দায় সেরেছে। ময়ূরাক্ষী নদীর উপর বেহাল ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে পারাপার। গাড়ি চালকদের অভিযোগ, বেহাল ব্রিজের কারণে নিত্যদিন গাড়ি বিকল হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রিজ সংস্কার নিয়ে গত ডিসেম্বর মাসে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একটি বৈঠক হয়। তারপরই সিদ্ধান্ত হয়, ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে নতুন বছরের অর্থাৎ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ব্রিজের সংস্কার চলবে ও তার জন্য ভারী যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সেই কারণে ব্যারেজ থেকে জলও ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলেও এখনও পর্যন্ত ব্রিজ সংস্কার তো দূরের কথা, ব্রিজের আশেপাশে এক গাড়ি বালি বা পাথর পড়ে থাকতেও দেখা যায়নি। কয়েক মাস ব্যারেজ জল শূন্য থাকার পর এখন ফের ব্যারেজে জল ভরেগিয়েছে। মহম্মদ বাজার থেকে সিউড়ির দিকেআসা ভারী গাড়িগুলিকে খয়ড়াকুড়ি ক্যানেল ব্রিজ পেরিয়ে ময়ূরাক্ষী নদীর উপর একটি অস্থায়ী কজওয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে সিউড়ি থেকে রামপুরহাট যাওয়ার মধ্যে তিলপাড়া ব্রিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ রক্ষার কাজও করে এটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যে ব্রিজের উপর পিচ চাপানো হয়। কিন্তু ভারী যান চলাচলের ফলে ও সংস্কার না করার কারণে বেহাল হয়ে পড়েছে। পিচ উঠে গিয়ে পাথর বেরিয়ে পড়েছে। ব্রিজের উপর দিয়ে যাতায়াত করার সময় কম্পন অনুভূত হয়। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে বেহাল ব্রিজের উপর নিত্যদিন যাতায়াত করতে হচ্ছে গাড়ির চালকদের। বিভিন্ন নথি ও প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৭৫ বছরেরও বেশি পুরনো তিলপাড়া ব্যারেজ। যা মিহিরলাল ব্যারেজনামেও পরিচিত । কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়া ব্যারেজের বেশ কিছু জায়গায় ফাটল দেখা গিয়েছে। সেগুলি সংস্কারের জন্যই ব্যারেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়প্রশাসন। সেই মতো গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস নাগাদ ব্যারেজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘুরে দেখেন ব্যারেজ। আধিকারিকরা ঘুরে যাওয়ার পর থেকে আর সে ব্যাপারে কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। বছর ঘুরে গেলেও বেহাল সেতু দিয়ে এখনও চলছে পারাপার। সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, টেন্ডার প্রক্রিয়া এখনও চলছে। লরি চালক শেখ লালন বলেন, কয়েক বছর ধরেই তিলপাড়া ব্রিজ বেহাল হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে পিচ দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকঠাক দেখভাল না হওয়ায় ব্যারেজর পাথর বেরিয়ে গিয়েছে। গাড়ি নিয়ে গেলে মনে হয় ব্যারেজ দুলছে।