নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কুম্ভমেলা নিয়ে ফের উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তাঁর অভিযোগ, সঠিক পরিকল্পনার অভাবেই কুম্ভস্নানে বিশৃঙ্খলা থেকে অপর্যাপ্ত রেল পরিষেবা এবং পুণ্যার্থীদের পথদুর্ঘটনার কবলে পড়ার মর্মান্তিক ঘটনাগুলি ঘটে চলেছে। এসবের রেশ ধরেই গর্জে উঠলেন বাংলার অগ্নিকন্যা, ‘কুম্ভমেলার আয়োজন সঠিকভাবে করা হয়নি।’
তবে কুম্ভ বা অন্য যেকোনও উৎসবকে তিনি সমান গুরুত্ব দেন এবং সম্মান করেন বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান। যাঁরা মহাকুম্ভে স্নান করতে যাচ্ছেন তাঁদেরও তিনি সম্মান করেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এখানেই মমতার প্রশ্ন, উত্তরপ্রদেশের ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার সঠিক ব্যবস্থা করেননি কেন? এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই এই প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, চারশো লোককে নিমন্ত্রণ করলে চারশো লোককেই খাওয়ানোর ব্যবস্থা রাখতে হয়। উপযুক্ত প্ল্যানিং করতে হয়। ইনসিডেন্ট বা অ্যাক্সিডেন্ট যেকোনও সময়ে হতে পারে। তবে সঠিক প্ল্যানিংয়ের অভাবে অ্যাক্সিডেন্ট হলে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়।
কুম্ভমেলার অব্যবস্থা নিয়ে এর আগে রাজ্য বিধানসভাতেও সুর সপ্তমে তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অব্যবস্থার জেরে পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে কুম্ভকে ‘মৃত্যু কুম্ভ’ বলেই কটাক্ষ করেন তিনি। মঙ্গলবার মমতা বলেন, ‘আমি কোনও ধর্মকে অসম্মান করিনি এবং করবও না। আমরা সর্ব ধর্ম সমন্বয় চাই। আমার বক্তব্য নিয়ে অনেকে নিছক কুৎসা বা অপপ্রচার করছেন।’ প্রসঙ্গত, কুম্ভমেলায় যাত্রাকালে পথদুর্ঘটনায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে। তালিকার রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গেরও কিছু মানুষ। ফলে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘যোগী সাহেব’ সম্বোধনসহ মমতা বলেন, ‘আমার একটা দাবি থাকবে, ...উনি আমাকে গালি দিতেই পারেন, তাতে আমার গায়ে ফোসকা পড়বে না। তবে আপনারা যখন টাকা (মৃতদের ক্ষতিপূরণ) দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন, তখন সেটা দিয়ে দেওয়াই উচিত।’
‘এই কুম্ভমেলা ১৪৪ বছর পর হচ্ছে এবং আবার ১৪৪ বছর পরে হবে’—মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই তথ্য সঠিক নয় বলেই তিনি শুনেছেন। এটা ১২ বছর আগেই হয়েছে বলে তাঁর দাবি। তবে এই বিষয়ে তাঁর পরিষ্কার ধারণা না-থাকায় বিশেষজ্ঞদের মতামত আহ্বান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, আজ বুধবার শিবরাত্রি। আর কিছুদিন পরেই দোলযাত্রা। এই অনুষ্ঠানগুলিতে মন্ত্রীদের নিজ নিজ এলাকায় নজর রাখার জন্য এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। সবকিছু যাতে সুষ্ঠুভাবে মেটে সেদিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে।