রেকর্ড উৎপাদন, সরকারি উদ্যোগে প্রথম পেঁয়াজ সংরক্ষণ রাজ্যে, দাম কমবে শীঘ্রই
বর্তমান | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্যে এবার রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা প্রথম চালু হতে চলেছে রাজ্যে। এতদিন বেসরকারি মালিকানায় পেঁয়াজ সংরক্ষণের জায়গা নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকার ভর্তুকি দিত। এবার বিভিন্ন জেলায় বড় ও ছোট মাপের পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার তৈরি করা হচ্ছে। শনিবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের ডাকা পর্যালোচনা বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। আগে আসার ভিত্তিতে ছোট ও মাঝারি চাষিদের এখানে পেঁয়াজ রাখার সুযোগ দেওয়ার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৫ মার্চ থেকে যাতে পেঁয়াজ রাখা যায় তার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
প্রতিটিতে ৪০ টন পেঁয়াজ রাখা যাবে এমন ৮টি বড় সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচটি জেলায়। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ও কালনা, হুগলির বলাগড় ও আদিসপ্তগ্রাম, মুর্শিদবাদের নওয়াদা ও সাগরদিঘি, নদীয়ার হাঁসখালি এবং মালদহের গাজোলে বড় সংরক্ষণাগার করা হয়েছে। মুখ্যসচিবের বৈঠকে পেশ করা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, অধিকাংশ জায়গায় ৯০ শতাংশ নির্মাণ কার্য হয়ে গিয়েছে। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের মধ্যে এগুলি চালু হয়ে যাবে। গাজোলের সংরক্ষণাগারটি ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গিয়েছে। ছোট সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হচ্ছে ৯১৭টি। প্রতিটিতে ৯ টন করে পণ্য রাখা যাবে। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, ৮৪৯টি তৈরির কাজ শেষ। ন’টি জেলায় ছোট সংরক্ষণাগারগুলি হবে। এই জেলাগুলি হল—দুই ২৪ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদবাদ, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম ও বাঁকুড়া। ছোট সংরক্ষণাগারগুলির নির্মাণের কাজ ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে উত্তর ২৪ পরগনা, বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসককে বিশেষ নজরদারি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যে নতুন পেঁয়াজ ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে। সম্প্রতি উদ্যানপালন দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ রায় জানিয়েছেন, এবার রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন হবে ৭ লক্ষ টন। গতবছর উৎপাদন হয়েছিল সাড়ে ৬ লক্ষ টন। দপ্তর সূত্রের খবর, এবার শীতকালে আবহাওয়া অনুকূল ছিল। এটি পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে পেঁয়াজের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও উৎপাদন তেমন ব্যাহত হবে না। অনুমান সরকারি কর্তাদের। রাজ্যের পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলেও এখনও কলকাতা লাগোয়া এলাকার খুচরো বাজারে তা কম পরিমাণেই আসছে। ফলে মহারাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পেঁয়াজই সাধারণ মানুষকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে জানান, কয়েকদিনের মধ্যে রাজ্যের পেঁয়াজও কলকাতার খুচরো বাজারে বেশি পরিমাণে মিলবে। তখন সবধরনেরই পেঁয়াজের দাম কমবে। মজুত রাখার সুযোগ সম্প্রসারিত হওয়ায় এবার রাজ্যের পেঁয়াজ বাংলার মানুষের চাহিদা আরও বেশিদিন ধরে মেটাতে পারবে। এতে আর্থিক সুবিধা হবে ক্রেতাদের।