সংবাদদাতা, বোলপুর: অজয় নদে ফের অবৈধভাবে বালি তোলা শুরু করেছে মাফিয়ারা। নদের মাঝ বরাবর রাস্তা তৈরি করে কোটি কোটি টাকার বালি লুট করছে দুর্বৃত্তের দল। এভাবেই প্রশাসন ও সরকারের প্রাপ্য মুনাফা ও রাজস্ব তারা নিজেদের পকেটে ভরছে। দিনের পর দিন এই অবৈধ কাজ চলছে বোলপুর থানার রায়পুর-সুপুর এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। এর ফলে নদের গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে। নদ সংলগ্ন কৃষিজমির কাছাকাছি গভীর গর্ত করে বালি তোলার কারণে সেই জমি নদের গ্রাসে চলে যাচ্ছে। অনেকেই ইতিমধ্যে জমি হারিয়েছেন। বালি মাফিয়াদের এই দৌরাত্ম্য রুখতে প্রশাসনকে আর্জি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার চাষিরা। তাদের দাবি, পুলিস, প্রশাসন, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর যদি নদ সংলগ্ন এলাকায় নজর না দেয়, তাহলে এলাকায় চাষের জমি আর অবশিষ্ট থাকবে না।
অজয় নদ থেকে বালি তোলার ঘটনা বীরভূম জেলায় নতুন বিষয় নয়। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কখনও দিনে বেলায়, কখনও ভোররাতে অবৈধভাবে বালি তুলছে মাফিয়ারা। জেলা প্রশাসন ও পুলিস মাঝেমধ্যে অভিযান চালালে মাফিয়ারা সাময়িক গা ঢাকা দেয়। কিন্তু পুলিস, প্রশাসন নজর ঘোরালেই ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে দুর্বৃত্তের দল। এর ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বোলপুর শ্রীনিকেতন ব্লকের রায়পুর-সুপুর পঞ্চায়েতের চাষিরা। তাদের অভিযোগ, অবৈধ বালির ঘাট তৈরি করে শুধু বালি পাচারের জন্য নদের বুকেই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। অতিরিক্ত লাভের আশায় নদের পাশে থাকা কৃষিজমির সংলগ্ন এলাকাতেও ফকলেন, জেসিবি, নৌকা প্রভৃতি মেশিনের মাধ্যমে টন টন বালি তুলছে দুষ্কৃতীরা। এতে সেই জমির নীচের অংশ ধসে গিয়ে নদে মিশে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট এলাকার অনেক চাষির জমি নদে মিশে গিয়েছে। এই রমরমা চললে মাসখানেকের মধ্যে শ’খানেক চাষি জমি হারাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় চাষি হরিপদ বিশ্বাস ও নাসিরউদ্দিন খানের অভিযোগ, বালি মাফিয়ার দল নদে অবৈধভাবে ঘাট বানিয়ে দিনের পর দিন বালি লুট করছে। তাদের পিছনে শাসকদলের নেতাদের একাংশের হাত রয়েছে। সেজন্যই তাদের এত দাপট। এমনটা চললে রায়পুর-সুপুর এলাকার প্রায় একশ চাষির কয়েক হাজার বিঘা জমি অজয় নদের গর্ভে চলে যাবে। প্রশাসনের হতক্ষেপের দাবি জানাই। এ প্রসঙ্গে জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, বিষয়টি সম্প্রতি নজরে এসেছে। খুব শীঘ্রই অভিযান চালিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।