• যে মৃত সে জীবিত, যে জীবিত সে মৃত! ভোটার তালিকায় 'ভূত' ভোটার TMC বুথ সভাপতির স্ত্রী...
    ২৪ ঘন্টা | ০১ মার্চ ২০২৫
  • বিধান সরকার: যে মৃত সে জীবিত। যে জীবিত সে মৃত। ভোটার তালিকায় এমন 'ভূত' ভোটার-ই শাসকের মাথাব্যথার কারণ!! চুঁচুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তৃণমূলের বুথ সভাপতি জয়ন্ত খাঁ, তাঁর স্ত্রী সুষমা ক্ষা-র মৃত্যুর পর ভোটার তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু জয়ন্তর নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে তাঁর স্ত্রী সুষমার নাম রেখে দেওয়া হয়।

    চুঁচুড়া শহরের তৃণমূল সভাপতি সঞ্জীব মিত্র বলেন, আমাদের দলের বুথ সভাপতির নাম ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ গেছে। এদিকে তাঁর মৃত স্ত্রীর নাম রয়েছে তালিকায়। অনলাইনে যারা এই কাজ করছেন, তাদের জন্যই এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। আমরা মহকুমা শাসককে জানিয়েছি বিষয়টা। এরকম অনেক হয়েছে, যাদের যে বুথে ভোট ছিল, সেই বুথ নম্বরও বদলে গেছে। আমাদের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অনেক ভোটার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে চলে গেছে। অথচ তারা জানেই না। এক একটা বুথে দশটা করে ভোট এদিক ওদিক হয়ে গেলেই ভোটের ফলাফল অন্যরকম হয়ে যেতে পারে। তাই আমরা ভোটার তালিকা দেখে এইসব গন্ডগোল যেখানে হয়েছে, সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি।

    প্রসঙ্গত, নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের মেগা মিটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় ভূতুড়ে ভোটার ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। সেই ভূত তাড়াতে নির্দেশ দেন জেলা নেতৃত্বকে। বুথে বুথে সার্ভে করতে বলেন। ফিল্ডে নেমে কাজ করতে বলেন নেত্রী। আর তারপরই আজ চুঁচুড়া বিধাসভার কর্মীদের নিয়ে সেই 'ভূত' ভোটার তাড়াতে বৈঠক করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বৈঠকে পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিষ চক্রবর্তী, জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন, চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।

    সেখানেই মন্ত্রী বলেন, দলের নির্দেশ রয়েছে প্রতিটা বিধানসভার প্রতিটা বুথের যে ভোটার তালিকা রয়েছে সেগুলো ভালো করে স্ক্রুটিনি করতে হবে। প্রকৃত ভোটারের নাম আছে কিনা, ভুয়ো ভোটার ঢুকে আছে কিনা সেটা দেখতে হবে। দিল্লির ভোটে দেখা গেছে অনলাইন সিস্টেমের জন্য বহু ভুয়ো ভোটার ঢুকেছে। দিল্লিতে বিজেপির জয় এই ভুয়ো ভোটারের জন্য-ই। আমরা চাই নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করা। নির্বাচন কমিশন তত্ত্বাবধানে থাকে। কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার তালিকা তৈরিতেই সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেই ব্যক্তি না গিয়েই তাঁর ভোটার কার্ড তৈরি হয়ে যাচ্ছে! এটা একটা গভীর চক্রান্ত চলছে নির্বাচন কমিশনকে সামনে রেখে! ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত!

    এখন নির্বাচন কমিশন তাদের এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছে যে, প্রশাসনের কর্মীরাই এর সঙ্গে যুক্ত আছে। সেই প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার, কেন্দ্র সরকারের কর্মী বলে কিছু হয় না। যখন নির্বাচন আসে, নির্বাচন কমিশন যাদের নিয়ে নেয়, তাঁরা নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন মেনেই কাজ করেন। তখন তিনি কোথা থেকে বেতন পাচ্ছেন, সেটা বিচার্য হয় না। তখন তিনি ভোটার তালিকায় যাঁদের যাঁদের নাম তুলবেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনেই তুলবেন। ফলে কে পরিচালনা করছে এটাই ফ্যাক্টর। নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে যদি ভোটার তালিকা তৈরি হয়, তাহলে দায় তাহলে তাদের-ই নিতে হবে। নির্বাচন কমিশনের কাজে কী ভুল আছে যথাসময়ে রিপোর্ট দেব।

    যদিও বিজেপির হুগলি জেলা সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ভোটার তালিকা তৈরি করে কারা? রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় নাম তুলেছে কারা? সেটা সবাই জানে। এভাবে তাদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে রাজ্যে। নিজেদের ভোটবাক্স মজবুত করার জন্য তৃণমূল-ই ভুতুড়ে ভোটার তৈরি করছে।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)