সোনাঝুরিতে দোল খেলায় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই, বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। পুলিশের তরফেও একই বার্তা দেওয়া হয়। সেই অভয় পাওয়ার পর চেনা ছন্দে দেখা গেল সোনাঝুরিকে। দোলের দিনে সেই চিরাচরিত ছবি। দূর থেকে এসেছেন বহু পর্যটক। রং, আবিরে মেতেছে সোনাঝুরি। চলছে গানবাজনাও। পরিবেশের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সেই বিষয়ে তাঁরা সচেতন বলেও জানান অধিকাংশ পর্যটকরা। শুক্রবার বন দপ্তরের তরফে লাগানো ‘সতর্কতামূলক হোর্ডিং’-ও দেখা গেল না সোনাঝুরিতে।
সম্প্রতি দোলের দিনে সোনাঝুরি হাটে রং খেলা ‘নিষিদ্ধ’ বলে একটি বার্তা দেওয়া হয় বন দপ্তরের তরফে। একটি ব্যানার টাঙিয়ে লেখা হয়েছিল ‘সংরক্ষিত বনাঞ্চল, এখানে রং খেলা, গাড়ি পার্কিং করা, ভিডিয়োগ্রাফি ও ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ।’ এই বিষয়টিতে রাজনৈতিক রং লাগে। বিজেপি ঘটনার প্রতিবাদ করে।
বৃহস্পতিবার দোলের আগের দিনে রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা অবশ্য জানিয়েছিলেন রং খেলা নিষিদ্ধ, এমন কোনও নির্দেশিকা সোনাঝুরিতে বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে বলে তাঁর জানা নেই। তিনি আরও জানান, সবুজ সুরক্ষিত রাখাই এই দপ্তরের উদ্দেশ্য। আর সেই জন্য শুধুমাত্র অনুরোধ করা হয়েছিল। কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় ও জানিয়েছিলেন, নিয়ম মেনে শান্তিনিকেতন, বোলপুরের সব জায়গাতে দোল খেলা যাবে।
এরপরেই শুক্রবার দোলের দিনে সোনাঝুরিতে রীতিমতো উচ্ছ্বাসে মেতে উঠতে দেখা যায় বহু পর্যটককে। কলকাতা থেকে সেখানে গিয়েছিলেন গীতশ্রী রায়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী অর্ণব গোস্বামী। গীতশ্রী বলেন, ‘এই পরিকল্পনাটা বহুদিন আগেই করেছিলাম। মাঝে শুনেছিলাম এখানে নাকি রং খেলতে দেওয়া হবে না। কিন্তু ততদিনে আমরা টিকিট কেটে নিয়েছিলাম। হোটেল বুকিং হয়ে গিয়েছিল। আজ সোনাঝুরিতে এসে দেখছি অনেকেই রং খেলছে। দেখে ভালো লাগল। আমরাও এই রঙের উৎসবে মেতে উঠেছি।’
অন্য এক পর্যটক অনন্যা রায় বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে না কোথাও কোনও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গান-নাচ হচ্ছে। আমরা বন্ধুরা আবির খেলছি। এ আমার কাছে চেনা সোনাঝুরি।’ এ দিকে সোনাঝুরির সবুজ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। যদিও অধিকাংশ পর্যটকরা এ দিন দাবি করেন তাঁরা পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই দোল খেলছেন।