এই সময়, নয়াদিল্লি: সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বাংলার গঙ্গাসাগর মেলাকে ‘জাতীয় মেলা’র স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্ন নেই, এই মেলাকে হেরিটেজ সার্টিফিকেট দিতেও নারাজ কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। সোমবার মোদী সরকারের এই অবস্থান সামনে এসেছে দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে।

গঙ্গাসাগর মেলার জাতীয় স্বীকৃতির জন্য বহুদিন থেকেই দাবি জানিয়ে আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই সংসদের উভয় কক্ষে এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদরাও। তারপরেও অনড় মোদী সরকার।

এই আবহে মালা রায়ের লিখিত প্রশ্নের জবাবে সোমবার কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের উত্তরে স্পষ্ট হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় সরকার গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দিতে আগ্রহী নয়। শুধু তা–ই নয়, এই মেলাকে হেরিটেজ তকমা দিতেও নারাজ মোদী সরকার।

তৃণমূল সাংসদের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে লোকসভায় লিখিত ভাবে যে ব্যাখ্যা জমা দিয়েছেন গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, সেখানে বলা হয়েছে— ‘দ্য এনশিয়েন্ট মনুমেন্টস অ্যান্ড আর্কিওলজিক্যাল সাইটস অ্যান্ড রিমেনস’ ১৯৫৮-এর ৪ (৩) ধারায় অধীনে পড়ে না গঙ্গাসাগর মেলা। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার আইন অনুযায়ী জরিপের মাধ্যমে সরকার কোনও প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ বা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানকে হেরিটেজ তকমা দেয়। এই তকমা পাওয়ার ক্ষেত্রে মূল শর্ত হলো ওই স্থান বা স্তম্ভের ঐতিহাসিক গুরুত্ব। সেই হিসেবে গঙ্গাসাগর মেলাকে হেরিটেজ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার কোনও প্রস্তাব কেন্দ্রের নেই।’

মোদী সরকারের এই অবস্থানকে পাল্টা বিঁধেছেন মালা। তাঁর অভিযোগ, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ক্ষেত্রে গঙ্গাসাগর মেলার ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও মাহাত্ম্যকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। বাংলার মানুষ কোনও দিনই এই নির্লজ্জ রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক আচরণকে ক্ষমা করবে না।’