নদিয়ার মুরুটিয়া থানার পুলিশ হেফাজতে বন্দির মৃত্যু হয়েছিল। তার জেরে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। দু’বছর আগের এই মামলায় আজ, মঙ্গলবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকী এই মামলার শুনানি চলাকালীন উঠে এল আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ প্রসঙ্গ। আজ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, এর আগে এই মামলার সঙ্গে মিল আছে আরও একটি ঘটনায় ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। আর সেই রায় সুপ্রিম কোর্টও বহাল রাখে।
এদিকে পুলিশ হেফাজতে শওকত মণ্ডলের মৃত্যু হয়েছিল। আর ২০২৩ সালের ২৫ অগস্ট যে ঘটনা ঘটেছিল তার বিরুদ্ধেই মামলা হয়। সেই প্রেক্ষিতে আজ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর সঙ্গে ওই হাসপাতালেই আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ক মামলার সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনার কথা ভেবে ‘আর্থিক অনিয়ম’ মামলাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। নদিয়ার মুরুটিয়ার শওকত মণ্ডলের মৃত্যুর ঘটনাতেও তাই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল।
অন্যদিকে নদিয়ার এই মামলায় আসল ঘটনা অন্য। এখানে এই মামলাকারীর নাম মঞ্জুরা বিবি। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ একটি মামলায় তাঁর ভাসুরকে ধরতে আসে। কিন্তু তাঁকে বাড়িতে না পেয়ে তাঁর স্বামী শওকত মণ্ডলকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পর দিন সকালে এলাকার একটি বাঁশবাগান থেকে শওকতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ লক আপেই মারধর করার জেরে মৃত্যু হয়েছে। এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মঞ্জুরা। মঞ্জুরা বিবির আরও অভিযোগ,তারপর পুলিশ ওই তাঁর জা’কেও থানায় তুলে নিয়ে যায় অন্য এক মিথ্যা মামলায়। ওই মামলায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ ওই মহিলার জামিন মঞ্জুর করেন। আর মিথ্যা মামলার অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।
এছাড়া মঞ্জুরা বিবির জা মাফুজার অভিযোগ ছিল, পুলিশ তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তাই সিবিআই তদন্ত চেয়ে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। ওই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এবার স্বামী শওকত মণ্ডলের মৃত্যুর তদন্তে সিবিআই চান মঞ্জুরা বিবি। এই ঘটনায় আজ, বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এই মামলাতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুন করার ঘটনা ও আর্থিক দুর্নীতি, দুটি মামলার তদন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে। তাহলে এক্ষেত্রে তা হবে না কেন?’