• মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছেপূরণ! কৃষ্ণ পাথরে তৈরি বড়মার ছোট মূর্তি উপহার দেবে নৈহাটির মন্দির কমিটি
    প্রতিদিন | ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাকপুর: গতবছর কালীপুজোর মাসেই নৈহাটির বড়মার মন্দিরের পুজো দিতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিনই মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে বিশাল আকারের বড়মার ছবি দিতে চেয়েছিল মন্দির কমিটি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর বাড়ি ছোট, তাই এত বড় ছবি নিতে পারবেন না। তাই বড় কালী পুজো সমিতির কাছে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেছিলেন, ছোট ‘বড়মার মূর্তি’ দেওয়ার জন্য, যেটি তিনি বাড়িতে পুজো করবেন। বড়মার সেই মূর্তি তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী পাঁচ-সাত দিনের মধ্যেই ছোট মূর্তিটি হাতে পেয়ে যাবে পুজো কমিটি। তারপর সাংসদ, বিধায়কের সঙ্গে কথা বলে ছোট ‘বড়মার মূর্তি’ বাংলা নববর্ষের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে নৈহাটি বড় কালী পুজো সমিতির। তবে সেই মূর্তি মুখ্যমন্ত্রীকে তুলে দেওয়ার আগে রয়েছে দীর্ঘ পদ্ধতি। মূর্তি শুদ্ধিকরণ-সহ মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যবাসীর মঙ্গলবার কামনায় যজ্ঞ করা হবে মন্দিরে।

    ২১ হাতের দীর্ঘদেহী, আজানুলম্বিত এলো কেশ, ঘোর কৃষ্ণবর্ণ, দীঘল চোখ থেকে ঠিকরে বেরচ্ছে তীব্র তেজ! সোনায় মোড়া আলোকদ্যুতিময় নৈহাটির বড়মার সেই চাহনির সামনে যেন কুঁকড়ে যেতে বাধ্য সারাজীবনের সমস্ত গরিমা। ছবির দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই যেন অবশ হয়ে আসে গোটা শরীর! তারপরেই মনে অপার শান্তি। প্রতি বছর কালী পুজো মায়ের এই রূপ দর্শনের জন্য ভিড় করেন লক্ষাধিক ভক্ত। এছাড়াও প্রতিদিন নৈহাটির অরবিন্দ রোডে বড়মার মন্দিরে পুজো দিতে উপচে পড়ে ভিড়। শতবর্ষের কালীপুজোয় একুশ হাতের দীর্ঘদেহী বড়মার পুজো দিতে এসেছিলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

    গত বছর নভেম্বরে ১০১তম বর্ষের কালীপুজোয় আসার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু নিজের বাড়িতে পুজো থাকায় পরে, ২৬ অক্টোবর তিনি পুজো দিতে এসেছিলেন বড়মার মন্দিরে। পুজো দিয়ে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বড়মার নামে নৈহাটি ফেরিঘাট, মন্দিরে একটি পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি হবে। সবকটি প্রতিশ্রুতি মুখ্যমন্ত্রী বলার পরপরই পূরণ হয়েছে। সেদিনই মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে একটি বিশাল আকারের বড়মার ছবি দিতে চেয়েছিল নৈহাটি বড় কালীপুজো সমিতি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি ছোট হওয়ায় বড় ছবি তিনি নিতে পারেননি। তাই বাড়িতে পুজো করার মত ছোট ‘বড়মার মূর্তি’ দিতে অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

    তাঁর ইচ্ছেপূরণ করতে শিল্পী শুভেন্দু সরকারের দীর্ঘ আড়াই মাসের চেষ্টায় ছোট মূর্তি তৈরি করেছেন। কাজ প্রায় শেষের দিকে। বালেশ্বরী কালো পাথরে তৈরি মূর্তিটির উচ্চতা সাড়ে ৫ ইঞ্চি, চওড়াও পাঁচ ইঞ্চি। চালচিত্রও তৈরি হয়েছে পাথর দিয়ে। মায়ের গায়ে অলংকার তৈরি করা হয়েছে পাথর খোদাই করে। মন্দির কমিটির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ”মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বড়মা প্রতিষ্ঠিত হবে, এটা আমাদের কাছে খুব গর্বের। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিকেই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে মূর্তিটি তুলে দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। এনিয়ে সাংসদ পার্থ ভৌমিক এবং বিধায়ক সনৎ দে-র সঙ্গে কথা বলব। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়ার আগে মূর্তিটি শুদ্ধিকরণ করে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যবাসীর মঙ্গল কামনায় মন্দিরে যজ্ঞ করা হবে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)