একই পরিবারের ৩ সদস্যের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি হুগলি জেলার গোঘাটের বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের উপশালঝাড় গ্রামের। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম অনিমা নন্দী (৭১), কাশীনাথ নন্দী (৫৫) এবং মমতা নন্দী (৪৭)। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে, আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। হুগলি গ্রামীণের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষাণু রায় বলেন, ‘প্রতিবেশীদের দাবি, নন্দী পরিবারের সদস্যরা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ মাস আগে কাশীনাথ নন্দীর ২১ বছরের ছেলে শান্তনু আত্মঘাতী হয়েছিলেন। তিনি ডাক্তারি পড়ুয়া ছিলেন। শান্তনুর মৃত্যুর থেকেই পরিবারের সকলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। পাড়ার লোকজন, আত্মীয়দের এড়িয়ে চলতেন তাঁরা। দেখা হলেও খুব একটা কথা বলতেন না। বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের কাউকে বাইরে বেরতে না দেখে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। বাড়ির বাইরে থেকে অনেক ডাকাডাকিও করেন তাঁরা। কোনও সাড়া না মেলায় দরজা ভেঙে বাড়ির মধ্যে ঢোকেন এলাকার বাসিন্দারা। সেই সময় তাঁরা দেখেন, গোয়ালঘরে তিনজন গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা গোঘাট থানায় খবর দেন। নন্দী পরিবারের তিনজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। সেখানকার চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ তাঁদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হবু ডাক্তার শান্তনু নন্দীকে ঘিরে পরিবারের বহু আশা-আকাঙ্খা ছিল। আচমকা শান্তনুর চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছিলেন না তাঁর বাবা, মা এবং ঠাকুমা। সেই কারণেই নিজেদের একঘরে করে ফেলেন তাঁরা। মাসের পর মাস মানসিক অবসাদে থেকে অবশেষে চরম সিদ্ধান্ত নিলেন শান্তনুর বাবা-মা এবং ঠাকুমা।