এবার ১৩২টি জরুরি ওষুধের দাম কমাল রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর। যার মধ্যে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ প্রতিরোধের একাধিক ওষুধও রয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যসাথী ভবন থেকে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে আরও ৯ টি ওষুধ স্বাস্থ্যসাথী গ্রুপের আওতায় আনা হয়েছে। একদিকে কেন্দ্র যখন লাগামছাড়া ওষুধের দাম বাড়লো সেই সময়ে স্বাস্থ্য ভবনের এই দাম নিয়ন্ত্রণকে আম আদমির পক্ষে বড় পদক্ষেপ বলে অভিমত রাজ্যের বেশিরভাগ চিকিৎসক সংগঠনের। যেসব ওষুধের দাম কমানো হয়েছে তার মধ্যে এন্টিবায়টিক,,হৃদ রোগ, স্ট্রোক এবং নার্ভের ওষুধ, ডায়বেটিস, এন্টি এলার্জি, কৃমি এবং কয়েকটি জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন।
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত রোগীর পরিবারের উপরে বাড়তি ওষুধের বোঝা কমাতে সাহায্য করবে। সেজন্য স্বাস্থ্যসাথী বিভাগের এই পদক্ষেপ। তবে সরকারি ডাক্তার সংগঠন দাবি করেছেন, যেন এইসব ওষুধ হাসপতালে থাকে, সেটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। কারন গ্রামের সাধারণ মানুষ এখনও সরকারি পরিষেবার ওপর ভরসা করেন। তাই ডাক্তারবাবু প্রেসক্রিপশন করলেও হাসপতালের স্টোকে যেন পর্যাপ্ত ওষুধ থাকে।
প্রসঙ্গত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল ফেরাতে জোর দিয়েছিলেন। নিয়েছেন একের পর এক পদক্ষেপ। বিভিন্ন হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিটও করেন। রাজ্যের প্রায় সব হাসপাতালে চালু করেছেন ‘ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান’। যার ফলে বহু গরিব পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়া সহজ হয়েছে। এরপর লকডাউনের সময় স্বাস্থ্যসাথীর মতো যুগান্তকারী প্রকল্প তাঁরই মস্তিষ্ক প্রসূত। যার মাধ্যমে খুব সহজেই দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন রাজ্যের সাধারণ গরিব থেকে মধ্যবিত্তরা।
সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকার নতুন ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের শুরুতেই এক ধাক্কায় ৭৪৮টি ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যার মধ্যে অনেকগুলো আবার জীবনদায়ী ওষুধও রয়েছে। আচমকা ওষুধের এই মূল্য বৃদ্ধির পিছনে ন্যাশানাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটির যুক্তি ছিল, পাইকারি বাজারে দামের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে ১.৭৪ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছে বেশ কিছু অত্যাবশ্যীয় ওষুধের। যার মধ্যে ক্যানসার থেকে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ– এমনকি শিশুদের বিভিন্ন রোগও তার মধ্যে রয়েছে। এমনকি দাম বাড়ানো হয়েছিল স্টেন্টরেরও। এ ব্যাপারে কেন্দ্রের যুক্তি, স্টেন্টও ওষুধের গোত্রের মধ্যে পড়ে। এই ইস্যুতে দেশজুড়ে বিতর্ক ও বিরোধিতার মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এবার ১৩২টি জরুরি ওষুধের দাম কমিয়ে কার্যত কেন্দ্রকে সমঝে দিল রাজ্য সরকার।