সংবাদদাতা, বাগডোগরা: বাইকের শব্দে হারিয়ে যেতে বসেছে সাইকেলের বেলের টু টাং শব্দ। তবে সেই সাইকেল চালিয়েই বিশ্বজয় করার স্বপ্ন দেখছেন বাগডোগরার গৌরব। নানান প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে সাইকেল চালিয়ে রাজ্যস্তরে তিনি স্বর্ণপদক ছিনিয়ে নিয়েছেন। সম্প্রতি রাজস্থানে জাতীয় স্তরে ১০০ কিমি সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ফিরেছেন ২১ বছরের গৌরব চক্রবর্তী। তবে বর্তমানে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
শিলিগুড়ি মহকুমার বাগডোগরার ক্ষুদিরামপল্লির বাসিন্দা গৌরব ১৭ বছর বয়স থেকেই সাইকেল চালানো শুরু করে। বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছেন। গৌরব বলেন, ২০২১ সালে হঠাৎ সাইকেল চালানোর ঝোঁক ওঠে। এরপর নানা ওয়েবসাইটে দেখে জানতে পারি সাইক্লিং নিয়ে আরও নানা বিষয় জানতে পারি। আমার লক্ষ্য এশিয়ান গেমস, ওলিম্পিকসে অংশ নেওয়া। সেখানে সেরা হওয়া। তাই বাগডোগরা, শিলিগুড়ি সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় সাইকেল চালানো শুরু করি। নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার পর কলকাতায় অনুষ্ঠিত রাজ্যস্তরের সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় সোনা জিতি। এরপর ব্রোঞ্জপদক থেকে শুরু করে আরও পুরস্কার পেয়েছি। চলতি মাসে রাজস্থানে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করে নবম স্থান অর্জন করেছি।
তবে গৌরবের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। ফলে তাঁকে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। গৌরব বলেন, প্রতিযোগিতায় যে রেসিং সাইকেল ব্যবহার করা হয়, তার একটি চাকারই দাম এক লক্ষ টাকা। আমার তা কেনার সামর্থ্য নেই। তাই অন্য এক প্রতিযোগীর সাইকেলের চাকা চেয়ে নিয়ে আমার সাইকেলে লাগিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিই। রাজ্যে সাইক্লিংয়ে তেমন কোনও সুযোগ সুবিধা না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। রাজ্যের ক্রীড়াদপ্তর অন্যান্য খেলার পাশাপাশি সাইক্লিংকেও গুরুত্ব দিলে ভালো হয়।
শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক কুন্তল গোস্বামী বলেন, এখানে সাইক্লিং নিয়ে কোনও অ্যাসোসিয়েশন নেই। সাইক্লিংয়ের রাজ্য সংগঠন আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা অবশ্যই এই প্রতিযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। লক্ষ্যে অবিচল গৌরব। - নিজস্ব চিত্র।