সংবাদদাতা, পতিরাম: বালুরঘাটে বিজেপির আন্দোলনে পুলিস-বিজেপি কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধে এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। পুলিসকে আক্রমণ ও নানা অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ মামলা শুরু করেছে পুলিস। এবার পাল্টা পুলিসের বিরুদ্ধে জাতীয় এসসি, এসটি কমিশনের চেয়ারপার্সন, হিউম্যান রাইটসের চেয়ারপার্সন এবং রাজ্য পুলিসের ডিআইজিকে অভিযোগ জানাল বিজেপি। পাশাপাশি বালুরঘাট থানায় ডিএসপি হেড কোয়ার্টার, ডিএসপি ডিইবি, বালুরঘাট থানার আইসি সহ একাধিক সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে তারা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এদিকে পুলিসের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সোমবার বালুরঘাট শহরে আন্দোলনে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিস সুপার চিন্ময় মিত্তাল বলেন, একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোথায় অভিযোগ হয়েছে জানা নেই।
বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই আন্দোলন করছিলাম। পুলিস কেন ব্যারিকেড দিয়ে আমাদের আটকাতে যাবে? তাই আমাদের কর্মীরা ব্যারিকেড ভাঙছিল। পুলিস ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের এলাকা থেকে বেরিয়ে ব্যারিকেডের এপারে এসে লাঠিচার্জ করে। নির্মমভাবে লাঠিচার্জের ফলে আমাদের সাধারণ সম্পাদক গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন। আমাদের এক কর্মীকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাই আমরা দিল্লিতে নানা জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছি। মিথ্যা অভিযোগ ও ভয় দেখিয়ে বিজেপিকে রোখা যাবে না।
পুলিসকে আক্রমণের বিরুদ্ধে সোমবার পথে নামে তৃণমূল। এদিন বিকেলে বালুরঘাট থানা মোড়ে তারা পথসভা করে বিজেপিকে আক্রমণ করে। তৃণমূলের টাউন সভাপতি প্রীতম রাম মণ্ডল বলেন, বিজেপি নেতাদের যে তাণ্ডব বালুরঘাটবাসী দেখেছে, তা আগে দেখা যায়নি। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যেভাবে পুলিস প্রশাসনের উপর হামলা করে প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার চক্রান্ত করা হয়েছিল, তার প্রতিবাদে আমরা পথসভা করলাম। আগামীতে এনিয়ে আমরা পথে নামব।
পুলিস জানিয়েছে, ধৃত বিজেপি কর্মীর নাম সন্তু সরকার। বাড়ি বালুরঘাট শহরের চকভৃগু এলাকায়। তাঁর বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা শুরু করেছে পুলিস। আরও বিজেপি কর্মীর খোঁজ চলছে। এদিকে, বিজেপিরও দুই কর্মী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। একজন এস টি সম্প্রদায়ের এবং আরেক জন এস সি সম্প্রদায়ের। জাতীয় এস সি, এস টি কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। হিউম্যান রাইটসেও একই অভিযোগ গিয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য পুলিসের ডিআইজি সহ বালুরঘাট থানার পুলিসকে এই অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত শনিবার বিকেলে বালুরঘাটে এসডিও অফিস অভিযান চালিয়েছিল বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন সুকান্ত মজুমদার। এছাড়াও ছিলেন বিজেপির দুই বিধায়ক সত্যেন রায় ও বুধরাই টুডু, জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী সহ অন্যান্যরা। বিজেপির ওই মিছিল এসডিও অফিসের সামনে আটকে দিলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। প্রথমে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা চালাতেই পুলিস লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। শুরু হয়ে যায় পুলিস ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের খণ্ডযুদ্ধ। ওই ঘটনায় দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন জখম হন।