নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া ও আসানসোল: শনিবার দুর্গাপুর ব্যারাজের পাশে দামোদর নদের উপর তৈরি অস্থায়ী রাস্তায় যানবাহনের ট্রায়াল রান শুরু হল। দ্রুত ব্যারাজ সংস্কারের কাজ শুরু হবে। তার আগে ওই অস্থায়ী রাস্তা চারচাকা, তিন চাকার যানবাহন ও বাইক চলাচলের উপযুক্ত কি না, তা এদিন যাচাই করে নেওয়া হয়। বাঁকুড়ার পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, দুর্গাপুর ব্যারাজের উপরের রাস্তা সংস্কারের কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে। সংস্কার চলাকালীন ব্যারাজের রাস্তার উপর দিয়ে শুধুমাত্র যাত্রীবাহী বাস যাতায়াত করতে পারবে। পণ্যবাহী ভারী যানবাহনগুলিকে মেজিয়া ও বর্ধমান হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। চারচাকা, তিনচাকা যানবাহন ও বাইক ব্যারাজের পাশে অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে চলাচল করবে। সুষ্ঠুভাবে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে।
পঞ্চাশের দশকে তৈরির পর থেকে দুর্গাপুর ব্যারাজের রাস্তার আমূল সংস্কার করা হয়নি। ওই সেতু বেশ কিছুটা লম্বা হওয়ার কারণে মাঝে মাঝে ফাঁক রাখতে হয়েছে। ছোট ছোট একাধিক কংক্রিটের স্ল্যাব সেতুর পিলারের উপর বসানো হয়েছিল। চাপ ও তাপের ফলে যাতে সেতুর স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট না হয়, তারজন্য দু’টি স্ল্যাবের মাঝে ওই ফাঁক(এক্সপ্যানশন জয়েন্ট) রাখা হয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারাজে ওই ধরনের মোট ৩৪টি ফাঁক রয়েছে। নির্মাণের পর এবারই প্রথম সেগুলি মেরামত করা হবে। তার আগে ব্যারাজের রাস্তার উপর গত ৭০ বছর ধরে পড়তে থাকা একের পর এক পিচের আস্তরণও তুলে ফেলে সেতুর ভার কমানো হবে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, সেচ দপ্তরের দামোদর হেড ওয়ার্কস বিভাগের হাতে ব্যারাজের ভার রয়েছে। পূর্তদপ্তরকে দিয়ে সংস্কারের কাজ করানো হবে। অন্তত মাস তিনেক সময় লাগবে। ব্যারাজের মূল সংস্কারের কাজের জন্য দেড় কোটি টাকা খরচ হবে। বিকল্প রাস্তা তৈরি সহ অন্যান্য কাজের জন্য আরও ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে।
কিন্তু যে সময় ব্যারাজ সংস্কারের কাজ হতে চলেছে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কালবৈশাখীর এই মরশুমে প্রবল ঝড় বৃষ্টি হলে যেমন সংস্কারের কাজ থমকে যাবে, তেমনই অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে আদৌও যাতায়াত করা যাবে কি না সন্দেহ রয়েছে। এদিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ব্যারাজের ১৮ নম্বর গেটের তলা দিয়ে বিপুল পরিমাণ জল বের হচ্ছে। বালির বস্তার বাধা টপকে তা রাস্তায় চলে আসছে। তাছাড়া ব্যারাজের নীচে থাকা সাত টন ওজনের বিশাল স্ল্যাবের উপর দিয়ে বাইক চালাতে হবে। এক একটি স্ল্যাবের মধ্যে বড় গ্যাপও রয়েছে। এতে বাইক চালানো কী আদৌ নিরাপদ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের ডিসি ট্রাফিক সতীশ পশুমূর্তি বলেন, এদিন থেকে ব্যারাজে পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। ব্যারাজে নিম্নভাগে গড়ে তোলা অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে বাইক চালানো ঝুকিপূর্ণ। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।