৬৭২ বাতিতে আরও ঝলমলে হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দির, কাজ শুরুর হিডকোর
প্রতিদিন | ১৫ মে ২০২৫
রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: এক ডজন স্তম্ভে ৬৭২ বাতি। আরও ঝলমলিয়ে উঠবে জগন্নাথ মন্দির। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) সঙ্গে ১২টি দিয়া বা প্রদীপস্তম্ভ প্রস্তুত। সেই সব প্রদীপস্তম্ভে ৬৭২টি ধাতব বাতি লাগানোর কাজ শুরু করেছে হিডকো। প্রতিটি প্রদীপস্তম্ভে ৫৬টি করে প্রদীপ জ্বলবে। অর্থাৎ ১২টি স্তম্ভে মোট ৬৭২টি মেটালিক ইলুমিনেটিং ল্যাম্প জ্বালানো হবে। ৩০ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে মন্দিরের দ্বারোদঘাটনের পর থেকে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার দর্শনে পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে। এবার সন্ধ্যার পর একসঙ্গে এতগুলো প্রদীপ জ্বলে উঠলে মন্দিরের জৌলুস আরও বাড়বে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের।
এমনিতেই সন্ধ্যার পর বাহারি আলোর রোশনাইয়ে ভাসে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে নাটমন্দির-সহ গোটা মন্দির চত্বর। পাশাপাশি ৬৭২টি প্রদীপ একসঙ্গে প্রজ্বলিত হলে মন্দিরের আকর্ষণ, দীপ্তি ও ব্যাপ্তি বেড়ে যাবে বলে দাবি পুণ্যার্থীদের।
সকালের দিকে রোদ থাকায় তেমন ভিড় না হলেও বিকেলের পর তাপমাত্রা কিছুটা কমতে শুরু করলেই মন্দিরে পুণ্যার্থীদের ভিড় উপচে পড়ে। মন্দিরের বাইরে সুসজ্জিত নেচার পার্কেও জমছে ভিড়। ব্যবসায়ীদের মুখে ফুটেছে হাসি। মন্দিরকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে সমস্ত প্রদীপস্তম্ভে ধাতব বাতি বসানো হচ্ছে। মন্দিরের ভিতর বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ফিডার পিলার বক্স অন্যত্র সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে পুজো দেওয়ার জন্যে ডালা সাজানোর নির্মিত স্টল, চৈতন্য গেট এবং মাসির বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরে (Digha Jagannath Temple) পুজো দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা যাবে ‘ডালা আর্কেড’ থেকে। দু’টি কমপ্লেক্সে মোট ৩৬টি স্টল তৈরি করা হয়েছে। নির্মাণ প্রায় শেষের মুখে।
৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ায় মন্দির উদ্বোধনের পর থেকে রোজ ৫৫ থেকে ৬০ হাজার পুণ্যার্থী মন্দিরে ভিড় করছেন। সপ্তাহান্তে বা ছুটির দিনে তা বেড়ে দ্বিগুণ, তিনগুণ ভিড় জমছে বলে জানা গিয়েছে। প্রয়োজনীয় সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে। উদয়পুরে বাংলা-ওড়িশা সীমানায় ২৪ ঘণ্টা চলছে নাকা চেকিং। মন্দিরের গেটেও আঁটসাঁট নিরাপত্তা রয়েছে। এ রাজ্যের পাশাপাশি ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকেও পুণ্যার্থীরা আসতে শুরু করেছেন বলে দাবি মন্দির পরিচালনের দায়িত্বে থাকা ইসকনের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গরমের ছুটি চলায় এই মুহূর্তে ভিড় অনেকটাই বেশি।
ট্রেন, বাস, প্রাইভেট গাড়িতে চড়ে হাজার হাজার পুণ্যার্থীর এখন গন্তব্যস্থল সৈকত দিঘা। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, প্রদীপস্তম্ভে ধাতব বাতি লাগানোর কাজ করবে হিডকো। ডালা আর্কেডের কাজ শেষের মুখে। হিডকো ওইসব স্টল বিলি করবে। মন্দির দেখার জন্য প্রতিদিন অসংখ্য ভক্ত দিঘায় আসছেন। ফলে অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেকটাই সমৃদ্ধ হচ্ছেন দিঘার ব্যবসায়ীরা। মন্দির চত্বরে একসঙ্গে এতগুলো প্রদীপ জ্বলে উঠলে মন্দির চত্বরের পরিবেশ পুণ্যার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।