‘বারবার ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম, শোনেনি।’ চোখে-মুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। ২৮ দিন বাংলাদেশে বন্দি থাকার অভিজ্ঞতা এখনও ভুলতে পারছেন না উকিল বর্মন। নিজ মুখে বলেই ফেললেন, ‘সীমান্তে কাঁটাতারের কাছে জমিতে আর চাষ করতে যেতে চাই না।’ কাঁটাতারের এ পারে জমির পাট্টা চাওয়ার দাবিও করেন কোচবিহারে বাসিন্দা।

উল্লেখ্য, বুধবার রাতে বাংলাদেশ থেকে বিজিবি উকিল বর্মনকে নিয়ে এসে শীতলকুচি সীমান্তে বিএসএফের ১৫৭ ব্যাটেলিয়ানের হাতে তুলে দেয়। বিএসএফ ও শীতলকুচি থানার পুলিশ উকিলকে তাঁর পশ্চিম শীতলকুচির বাড়িতে নিয়ে আসে। উকিল বর্মনের বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এছাড়া মাথাভাঙা আদালতে প্রয়োজনীয় আইনি জটিলতা মেটানোর কাজও করা হয়।

উকিল বর্মন জানান, অপহরণ করে যখন বাংলাদেশের দুষ্কৃতীদের দল তুলে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন অনুরোধ করলেও তাঁকে মুক্ত করা হয়নি। এর পরে বিজিবি উদ্ধার করে হাতীবান্ধা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।  পরে লালমনিরহাট আদালতের রায়ে সেখানে সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। উকিল বলেন, ‘এই ২৮ দিন বন্দী হয়ে শুধু একটাই কথা ভেবেছি বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরতে পারব তো?’ অবশেষে বাড়ি ফিরে কিছুটা স্বস্তিতে তিনি।

উকিল বর্মন বাড়িতে ফিরতেই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বদের ভিড় উপচে পড়েছে বুধবার রাত থেকেই৷ উকিলের বাড়ি যাওয়ার সময়ে এ দিন বিজেপি বিধায়কদের তৃণমূলের  বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে৷ এমনকী বিক্ষুদ্ধরা ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তুলে বিজেপি বিধায়ক ও নেতৃত্বদের দিকে তেড়েও আসেন বলে অভিযোগ৷ বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল কর্মীদের দাবি, উকিলের পরিবারের দুর্দিনে পাশে না থেকে এখন প্রচার পেতে তাঁর বাড়ি এসেছে বিজেপি। 

যদিও বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষের দাবি, ‘একা হাতে কৃতিত্ব নিতে চায় তৃণমূল। তাই বিজেপি বিধায়কদের উপরে চড়াও হয়েছে তাঁরা। উকিলের পরিবার জানে কেন্দ্র সরকার ও বিএসএফ কী ভাবে তাঁর পাশে ছিল।’ অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘উকিল বর্মন অপহৃত হওয়ার পরে তাঁর পরিবারের পাশে বিজেপির কাউকে দেখা যায় নি। অথচ উকিল বর্মন বাড়ি ফিরতেই বিজেপি নেতারা তাঁর বাড়িতে হাজির৷ সাধারণ মানুষ সব বোঝেন, সব জানেন।’