মোবাইল ফোনের সিম কার্ড বেআইনি ভাবে বিক্রি ও বিলির চক্রে এ বার বেঙ্গল এসটিএফ ও কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের নজরে মিডলম্যান সামিউল হক। যাঁর খোঁজে কিছুদিন আগে সিবিআই উত্তর চব্বিশ পরগনায় অভিযান চালিয়েছিল।
তখন জানা যায়, বারাসতের সাইবার থানার একটি মামলায় কিছু দিন আগেই ওই ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন, দমদম জেলে বন্দি। বেঙ্গল এসটিএফ, কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা এ বার একাধিক সাইবার ক্রাইম, ডিজিটাল অ্যারেস্টের মামলায় তাঁকে দমদম জেলে গিয়ে জেরা করতে চলেছেন।
সাইবার প্রতারণা, ডিজিটাল অ্যারেস্টের বহু ঘটনায় সামিউলের হাত থাকতে পারে বলেই অনুমান গোয়েন্দাদের। দমদম জেলে গিয়ে তাঁকে জেরা করে কলকাতা–সহ দেশজুড়ে ডিজিটাল অ্যারেস্টের নানা ঘটনা এবং ভুয়ো সিমচক্রে জড়িতদের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করতে চাইছেন গোয়েন্দারা।
কলকাতা পুলিশ গত বছর সিমচক্রে একদল জালিয়াতকে গ্রেপ্তার করেছিল। যারা সিম নিত বিভিন্ন এজেন্ট, মিডলম্যানদের থেকে। কম্বোডিয়া–সহ বিদেশে বিভিন্ন জায়গায় ওই সিম এ রাজ্য থেকে কফির প্যাকেটে পাচার করা হতো বলে জানতে পারেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের অনুমান, সাইবার অপরাধীরা টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী ও বিক্রেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে বেআইনি ভাবে সিম কার্ড নিয়ে ডিজিটাল অ্যারেস্টের ঘটনা ঘটাচ্ছে।
বেআইনি সিমচক্রের বিরুদ্ধে সম্প্রতি সিবিআই ৮টি রাজ্যে ৪২টি জায়গায় অভিযান চালায়। সামিউলের তথ্যও প্রথম পায় সিবিআই। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে সিবিআই জানতে পারে, গত ৭ এপ্রিল বারাসতের ডিজিটাল অ্যারেস্টের এক মামলায় সামিউলকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ।
সামিউলের বাড়ি অশোকনগরে। সিবিআইয়ের দাবি, মিডলম্যান সামিউলের সূত্র ধরেই রাজ্য–সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল অ্যারেস্ট এবং বেআইনি সিমচক্রের এজেন্ট–মিডলম্যানদের খোঁজ মিলতে পারে।
গোয়েন্দারা জেনেছেন, আমডাঙার তোফাজ হোসেন নামে এক যুবক সাধনপুরে সিমকার্ডের দোকান খোলার জন্যে লাইসেন্স পেতে চেষ্টা করেছিলেন সামিউলকে ধরে। সামিউল তোফাজের নথি নিয়ে বেআইনি ভাবে একগুচ্ছ সিম জোগাড় করেন। যা কিনা ডিজিটাল অ্যারেস্ট ও একাধিক আর্থিক প্রতারণায় ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, অসম, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা–সহ বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান চালিয়ে সিবিআই সিমচক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, বারাসত, কলকাতা, মুর্শিদাবাদের একাধিক জায়গায় অভিযান চালানো হয়। সিমচক্রে মিডলম্যান হিসেবে সামিউলের ভূমিকা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে যে এ বার কলকাতা পুলিশ, বেঙ্গল এসটিএফও তাঁকে জেরা করতে চলেছে।