• শৃঙ্গ ছুঁয়েও ঘরে ফেরা হলো না, এভারেস্টের কোলেই মৃত্যু রানাঘাটের সুব্রতর
    এই সময় | ১৬ মে ২০২৫
  • স্বপ্ন ছুঁয়েও উৎসব করা আর হলো না। এভারেস্ট শৃঙ্গ জয়ের তালিকায় আরও এক বাঙালি হিসেবে সামিল হওয়ার পরও আচমকাই শেষ হয়ে গেল পর্বতপ্রেমী সুব্রত ঘোষের সফর। শৃঙ্গ ছুঁয়ে নেমে আসার সময়েই মৃত্যু হলো রানাঘাটের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক সুব্রত ঘোষের। এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাস জানিয়েছেন, নামার পথে সাউথ সাইটের কাছাকাছি কোথাও অন্ধকারে আটকে পড়েছিলেন সুব্রত ঘোষ। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এভারেস্ট সামিট শুরু হতেই আবারও মৃত্যুর খবরে উদ্বেগ।

    বৃহস্পতিবার বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের শীর্ষে পৌঁছন সুব্রত ঘোষ এবং রানাঘাটের আরও একজন শিক্ষিকা রুম্পা দাস। রুম্পা গতকাল সন্ধ্যাতেই ক্যাম্প করে নেমে এসেছেন। প্রথমে তাঁরই অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর মেলেছিল। কিন্তু শৃঙ্গ ছোঁয়ার সময়ে সুস্থই ছিলেন সুব্রত ঘোষ বলে জানা গিয়েছে। তবে আবহাওয়া সে সময়ে ছিল প্রতিকূল। সূত্রের দাবি, আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে শৃঙ্গে পৌঁছতে অনেকটাই সময় লাগে সুব্রত ঘোষের। তাঁর অক্সিজেন ফুরিয়ে গিয়েছিল বলে দাবি।

    পর্বতারোহণের নিয়ম, বলে সকাল আটটা-ন’টার মধ্যে শৃঙ্গ ছুঁয়ে দশটার মধ্যেই নেমে আসতে হয়। এজেন্সি সূত্রে খবর, শৃঙ্গ জয় করতে বেরোনোর সময়ই দেরি করেন সুব্রত ঘোষ। রাত ১১টায় বেরিয়ে প্রায় দুপুর দুটো নাগাদ শৃঙ্গ ছুঁয়ে তার পর নামার জন্য রওনা হন। অতিরিক্ত সময় লাগায় শেষ হয়ে গিয়েছিল অক্সিজেন। তাঁর সঙ্গে থাকা শেরপা জানিয়েছেন, হিলারি স্টেপের কাছে এসেই একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়েন সুব্রত বাবু। তাঁকে নামানোর অনেক চেষ্টা করেও পারেননি শেরপা। ওখানেই মৃত্যু হয় এভারেস্ট জয়ীর।

    রাতে সুব্রত ঘোষের বেসক্যাম্পে না ফেরা নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন পরিবার ও ক্লাবের সদস্যরা। পরে সকাল হতেই তাঁর মৃত্যুর খবর মেলে।

    বৃহস্পতিবারই তাঁর শৃঙ্গ ছোঁয়ার খবর আসার পর বাড়িতে ছিল উৎসবের মেজাজ। সেই বাড়িতেই এখন শোকের ছায়া। রানাঘাট তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুব্রত ঘোষ। বাগদা ব্লকের কাপাসাটি মিলন বিথি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন তিনি। ৪৫ বছর বয়সি এই শিক্ষকের বহুদিনের স্বপ্ন ছিল এভারেস্ট সামিট। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পর্বতারোহী বসন্ত সিংহ রায়ের মাউন্টেনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ কৃষ্ণনগর-এর সদস্য সুব্রত ঘোষ। তবে সূত্রের খবর, এ বারের অভিযানে ক্লাবের তরফে শুধু রুম্পা দাস এবং অসীম কুমার মণ্ডলকেই পাঠানো হয়েছিল। সুব্রত ঘোষ অভিযানে সামিল হয়েছিলেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে।

    শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, হিলারি স্টেপের কাছে রয়েছে সুব্রত ঘোষের মৃতদেহ। ভোর চারটের সময় বেসক্যাম্প-৪-এ এসে তাঁর মৃত্যু সংবাদ দেন শেরপা। এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃতদেহ নামানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

  • Link to this news (এই সময়)