নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: ৪৫ ঘন্টার মধ্যে ঝালদার ব্যবসায়ী অপহরণ কাণ্ডের কিনারা করল পুলিস। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে তুণ্ডির জঙ্গল এলাকা থেকে পুরুলিয়া জেলা পুলিস ওই ব্যবসায়ীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। তবে ঘটনায় অপরাধীদের চিহ্নিত করতে পারলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিস। পুলিস সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়লা নিয়ে এসে বিক্রি করতেন লোকেশ। ব্যবসায়িক কোনও শত্রুতার জেরেই তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল কি না তা তদন্ত করে দেখতে চাইছে পুলিস।
জেলার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অপরাধীরা পুলিসের তাড়া খেয়ে কোনও বিকল্প উপায় খুঁজে না পেয়ে বাধ্য হয়ে ওই ব্যবসায়ীকে রেখে চম্পট দেয়। তারপর আমরা ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করি। পুলিস সুপার বলেন, ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলতে আমরা প্রথামিকভাবে জানতে পেরেছি যে মুক্তিপণের জন্যই তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। তবে, মুক্তিপণ চেয়ে ব্যবসায়ীর পরিবারে কোনও ফোন আসেনি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল ব্যবসায়ীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা। আমরা তা করতে পেরেছি। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। আশা করছি অপরাধীদের শীঘ্রই আমরা গ্রেপ্তার করতে পারব। অপরাধীদের অধিকাংশই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন পুলিস সুপার। পুলিস সূত্রের খবর, গত ১৯ মে একেবারে সিনেমার কায়দায় অপহৃত হন ঝালদার কয়লা ব্যবসায়ী লোকেশ গরাঁই। তাঁর বাড়ি ঝাড়খন্ড সীমানা ঘেঁষা ব্রজপুরে। ওইদিন প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গী ছিলেন গ্রামেরই বাসিন্দা ভৃগুরাম চালক। অভিযোগ, সেই সময় হঠাৎ একটি কালো গাড়ি এসে দাঁড়ায় ওই ব্যবসায়ীর সামনে। গাড়ি থেকে কয়েকজন দুষ্কৃতী নেমে ব্যবসায়ীর মুখে গামছা বেঁধে তাঁকে গাড়িতে তোলেন। ব্যবসায়ীর সঙ্গে থাকা ব্যক্তি দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা চাউর হতেই তদন্তে নামে পুলিস। পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলা পুলিস সুপার (অপারেশন) যোধাবর অবিনাশ ভীমরাওয়ের নেতৃত্বে পুলিস একাধিক দলে ভাগ হয়ে তদন্ত শুরু করে। জেলার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তদন্তে নেমে বিভিন্ন সূত্র মারফত আমরা একাধিক প্রমাণ যোগাড় করার চেষ্টা করি। বিভিন্ন সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আমরা জানতে পারি, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে দুষ্কৃতীরা ঝাড়খণ্ডের দিকে পালিয়েছেন। যে গাড়িতে করে দুষ্কৃতীরা অপহরণ করতে এসেছিল, সেই গাড়িটিও চিহ্নিত করে আমরা বাজেয়াপ্ত করেছি। পুলিস সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মধ্যরাতে অপরাধীদের রীতিমতো ধাওয়া করতে থাকে পুলিস। পুলিসের হাতে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়েই দুষ্কৃতীরা ব্যবসায়ীকে ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।