অতি অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা কমায় বাঁকুড়ায় স্বস্তি
বর্তমান | ২২ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: একবছরে বাঁকুড়া জেলায় অতি অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। গতবছরের মে মাসে জেলায় ৯৪৯২জন শিশু অতি অপুষ্টিতে ভুগছিল। এবছর মার্চের শেষে সেই সংখ্যা কমে ২০০৭ হয়েছে। নিচুস্তরে সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে মিড-ডে মিল খাওয়া সহ অন্য বিষয়ে ধারাবাহিক নজরদারির জেরেই শিশুদের মধ্যে অতি অপুষ্টি কমেছে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন।
সেইসঙ্গে শিশুদের কম ওজনজনিত সমস্যাও অনেকটা কমেছে। গতবছর জেলায় ৫৬৯৫শিশুর স্বাভাবিকের থেকে কম ওজন ছিল। এবার তা কমে ১৯৫১ হয়েছে।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য সরকার জোর দিয়েছে। আগে জেলায় অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা ছাদ ছিল না। সর্বত্র স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্নার ব্যবস্থা করা সম্ভব হতো না। বাঁকুড়ায় এখন কোনও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রই খোলা আকাশের নীচে চলে না। যে সমস্ত কেন্দ্রের স্থায়ী ভবন নেই, সেগুলি স্কুল, ক্লাব বা কারও পাকা দালানে চলে। ফলে সর্বত্র স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না হয়। শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতিরা পুষ্টিকর খাবার পান।
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, আগে শিশুদের শারীরিক অবস্থা-সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে জেলাস্তরে পৌঁছত না। ফলে তথ্যে অনেক ফাঁকফোঁকর থেকে যেত। আমরা নিয়মিত তথ্য সংগ্রহে জোর দিয়েছি। পরিষেবার উপরও বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আমরা একবছরে সিডিপিও, সুপারভাইজারদের ময়দানে নামিয়ে ছিলাম। তাঁরা নিয়মিত ওইসব বিষয়ে নজরদারি চালান। নির্দিষ্ট অ্যাপে ঠিকসময়ে তথ্য আপলোড করার বিষয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। এই সামগ্রিক চেষ্টারই সুফল আমরা পেয়েছি। আগামী দিনেও সার্বিক নজরদারি চালানো হবে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বাঁকুড়ায় ৫৭৩৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে ছ’বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। প্রাক-প্রাথমিক স্তরের পঠনপাঠনের ব্যবস্থাও রয়েছে। জেলায় ২ লক্ষ ৭৪হাজার ৯৫৪ শিশু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিষেবা পেয়ে থাকে।
তবে রাজ্যজুড়ে নতুন করে গড়ে তোলা বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া নিয়ে সমস্যা রয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বিদ্যুৎবিলের জন্য সরকারের তরফে আলাদাভাবে টাকা বরাদ্দ করা হয় না। আগামী দিনে নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে বিদ্যুৎ-সংযোগের ব্যবস্থা করা হলে পরিষেবা আরও উন্নত হবে। তাহলে পানীয় জল সহ অন্য সমস্যা মিটবে।