মায়ের জন্য লেখা শেষ চিঠি। চিপসের প্যাকেট চুরি করিনি। কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। চিপস প্যাকেট চুরির অপবাদে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ার। দোকানদারের মিথ্যা চুরির অপবাদ এবং প্রকাশ্য রাস্তায় কান ধরে ওঠবোস মেনে নিতে পারেনি ছাত্রটি। বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ক্লাস সেভেনের ওই পড়ুয়া। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার গোঁসাইবেড় এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।
কৃষ্ণেন্দু দাস। পাঁশকুড়ার গোঁসাইবেড় বাজারের বাসিন্দা ওই ছাত্র বাজারে চিপস কিনতে বেরিয়েছিলেন। পরিবারের দাবি, যে দোকানে কৃষ্ণেন্দু গিয়েছিল সেদিন সেই দোকানে চিপস ছিল না। দোকানদারকে বারবার ডেকেও সাড়া পায়নি সে। দোকানের বাইরেই চিপসের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখে কৃষ্ণেন্দু প্যাকেট কুড়িয়ে নেয়। বাড়ি ফেরার সময় দোকানের মালিক শুভঙ্কর দীক্ষিত, পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার মোটর বাইক নিয়ে নাবালকের পিছু ধাওয়া করে। কৃষ্ণেন্দুকে পাকড়াও করে চুরির অপবাদ দেয়। রাস্তায় কান ধরে ওঠবস এবং মারধর করে বলেও অভিযোগ।
মারধর করার সময় কৃষ্ণেন্দু চিপসের দাম ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে দেয়। তা সত্ত্বেও চলতে থাকে মারধর। সে সময় নাবালকের মা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। কৃষ্ণেন্দুকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন। বকাঝকাও করেন। এরপর বাড়ি এসে একটি ঘরে ঢুকে যায় নাবালক। বেশ কিছুক্ষণ পর ঘরে ঢুকে দেখা যায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে নাবালক। একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে ঘর থেকে। যাতে লেখা, “মা আমি বলে যাচ্ছি যে আমি কুড়কুড়েটি রাস্তার ধারে কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। চুরি করিনি।”
পরিবারের দাবি, বাড়িতে থাকা কীটনাশক খেয়ে নেয় ওই নাবালক। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় কৃষ্ণেন্দুর। নাবালকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া। কৃষ্ণেন্দুর মা বাবা শোকে পাথর। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের কঠোর শাস্তির দাবি তুলছে এলাকাবাসী।