আশিস নন্দী ও সুপ্রকাশ চক্রবর্তী
খুচরো নিয়ে বাসে, ট্রামে, হাটে, বাজারে ঠোকাঠুকি লেগেই রয়েছে। খুচরো না থাকার জন্য বাসের ভাড়া মেটাতে গিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়েন। তা নিয়ে কেউ কেউ বাস কন্ডাক্টরদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন।
সেই ঝক্কি এড়াতে এ বার অভিনব সিদ্ধান্ত নিলেন হাওড়া বি গার্ডেন-বারাসত রুটের কয়েকজন বাস মালিক। খুচরোর সমস্যা মেটাতে বাসে চালু হলো ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম। বাসের ভিতরে দেওয়া থাকছে কিউআর কোড। ফলে যাত্রীরা চাইলেই ফোন পে কিংবা গুগ পে–তে খুব সহজেই বাসের ভাড়া মিটিয়ে দিতে পারবেন।
আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে তিনটি বেসরকারি বাসে এই পরিষেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে এই রুটের সমস্ত বাসে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম চালু করা হবে জানাচ্ছেন বাস মালিকরা।
বারাসত থেকে হাওড়ার শিবপুর বি গার্ডেন রুটে এখন মোট ৩৮টি বেসরকারি বাস চলাচল করে। যাত্রীর সংখ্যাও নেহাত মন্দ নয়। বাস মালিকরা জানাচ্ছেন, খুচরো নিয়ে রোজই সমস্যায় পড়তে হয় বাস কন্ডাক্টরদের।
তার জন্য বাটা দিয়ে খুচরো জোগাড় করতে হয়। দেড় হাজার টাকার খুচরো পয়সার জন্য ১৫০ টাকা বাটা দিতে হয়। তাতে অনেক টাকা বেরিয়ে যায়। তাই বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ডিজিটাল পেমেন্টের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে মালিকদের।
তাঁদেরই একজন গোপাল নন্দী। বি গার্ডেন–বারাসত রুটে তাঁর দুটি বাস চলে। কয়েক মাস আগে তিনি বাসে ডিজিটাল পেমেন্টের জন্য কিউআর কোডের স্টিকার লাগিয়েছেন। আর এক মালিক বিল্টু দাসও একই পথ অনুসরণ করেছেন। তাতে অনেকটাই ঝামেলা মুক্ত হয়েছে বাসকর্মীরা।
যাত্রীরা কন্ডাক্টরদের কাছ থেকে ভাড়া জেনে নিয়ে কিউআর কোড স্ক্যান করে ভাড়া মিটিয়ে নেমে যাচ্ছেন। কিউআর কোডের মাধ্যমে একেকটা বাস থেকে রোজ গড়ে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা ভাড়া আদায় হচ্ছে।
এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন যাত্রীরাও। বি গার্ডেন–বারাসত রুটের নিত্যযাত্রী পঙ্কজ সমাদ্দার, কুহেলি মিত্ররা জানাচ্ছেন, এখন চায়ের দোকানেও ডিজিটাল পেমেন্ট হচ্ছে। ডিজিটাল সিস্টেমে বাসের ভাড়া দিতে খুবই সুবিধা হচ্ছে। খুচরো নিয়ে আর কোনও ঝামেলা হচ্ছে না।
বারাসতের বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক অলোক বিশ্বাস বলেন, ‘এখন তিনটি বাসে কিউআর কোড চালু হয়েছে। এটা মালিকদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে, অধিকাংশ বাস মালিক এখনও এই সিস্টেম চালু করেননি। ভবিষ্যতে হয়তো করবেন।’
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সহ–সভাপতি কালী রুদ্র বলেন, ‘ডিজিটাল সিস্টেমে বাসের ভাড়া নেওয়া খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। ওঁদেরকে দেখে আগামী দিনে অন্য মালিকরাও হয়তো এগিয়ে আসবেন।’