চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১০৩টি অমৃত ভারত রেল প্রজেক্ট স্টেশনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের তিনটি এবং অসমের একটি স্টেশন থাকলেও অদ্ভূত ভাবে উত্তরবঙ্গের কোনও স্টেশন নেই।
অথচ, উদ্বোধন হওয়া স্টেশনগুলোর সঙ্গে প্রায় একই সময়ে কাজ শুরু হয়েছিল আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ১৫টি স্টেশনের। জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের এই স্টেশনগুলোর কাজে গতি নেই। নানা কারণে মন্থর ভাবে স্টেশনগুলোর আধুনিকিকরণের কাজ চলছে বলে অভিযোগ।
তাই এ দিনের তালিকায় ঠাঁই হয়নি উত্তরের কোনও স্টেশনের। আগামী সপ্তাহেই আলিপুরদুয়ারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে এতগুলি স্টেশন তাঁর হাত দিয়ে উদ্বোধন হলেও আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের একটিও স্টেশন না থাকায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর অভিযোগ, ‘অমৃত ভারতের কাজ করতে গিয়ে প্রত্যেকটি স্টেশনে বিপদ বাড়ছে। ট্রেনে ওঠা–নামা করতে গিয়ে সব জায়গাতেই সমস্যা হচ্ছে।’ তাই দ্রুত স্টেশনগুলোর কাজ শেষ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অভয় গণপত সনপ বলেন, ‘অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে। এ বছরই সমস্ত কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।’
এই বিষয়ে রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই অঞ্চলে বৃষ্টি বেশি হওয়ার জন্য সমস্যা হয়। পাশাপাশি কিছু জায়গায় জবরদখল ছিল। সেগুলো সরাতেও সময় লেগেছে। স্থানীয় স্তরে কিছু সমস্যা রয়েছে বলে জানান তিনি। যদিও সেই সমস্যার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের মধ্যে ১৫টি স্টেশন নতুন অমৃত ভারত রেল প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। ২০২২ সালে এই প্রকল্পের ঘোষণা হয়। এরপর ২০২৩ সালে জুলাই মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের যে ১৫টি স্টেশন অমৃত ভারত প্রোজেক্টের মধ্যে রয়েছে তার মধ্যে উত্তরবঙ্গের ১০টি স্টেশন রয়েছে।
অসমে পড়ছে পাঁচটি রেল স্টেশন। উত্তরবঙ্গে কামাখ্যাগুড়ি, দিনহাটা, নিউ আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটা, ধূপগুড়ি, জলপাইগুড়ি রোড, হাসিমারা, দলগাঁও, বিন্নাগুড়ি এবং নিউ মাল জংশন স্টেশন এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে।
অসমে পড়ছে গোঁসাইগাঁও, ধুবড়ি, গৌরীপুর, কোকরাঝাড় ও ফকিরাগ্রাম রেলস্টেশন। অমৃত ভারত রেল প্রকল্পে যুক্ত হওয়া স্টেশনগুলোর নতুন ভবন তৈরির পাশাপাশি পার্কিং জোন তৈরি করা হচ্ছে।
ফুড কোর্ট, বসার আলাদা জায়গা, অত্যাধুনিক আলোর ব্যবস্থা করা, গোটা স্টেশন চত্বরকে সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো–সহ একেবারে খোলনালচে পাল্টে ফেলা হচ্ছে। তবে আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের কামাখ্যাগুড়ি, ফকিরা গ্রাম, কোকরাঝাড় ছাড়া অন্য স্টেশনগুলোর কাজের গতি একেবারেই কম বলে অভিযোগ।