• উত্তরপত্রে কারচুপি থাকলে পরীক্ষা নয়, ‘অযোগ্য’দের আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৪ মে ২০২৫
  • যে সকল চাকরিহারাদের বিরুদ্ধে উত্তরপত্র বা এমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে তাঁরা স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারবেন না। শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ জানিয়েছে, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবেন না তাঁরা। উত্তরপত্রে কারচুপি থাকলে সংশ্লিষ্ট চাকরিহারা শিক্ষকরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। এমনকী বেতনও পাবেন না।

    সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি-র ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল হওয়ায় ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারিয়েছেন। কমিশনকে ফের নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। যাঁরা ‘দাগি’ বা ‘অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত, তাঁদের বেতনও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ এসেছিল। পাশাপাশি বলে দেওয়া হয়েছিল, এই সকল ‘দাগি’ চাকরিহারারা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আর যোগ দিতে পারবেন না। যদিও নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশের দাবি, তাঁরা এই ‘দাগি’দের তালিকায় পড়েন না। কারণ, তাঁরা সাদা খাতা জমা দেননি অথবা প্যানেল-বহির্ভূতভাবেও চাকরি পাননি। তাঁদের উত্তরপত্রে কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। সেই কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চেয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বেতনও চেয়েছিলেন।

    শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ যে রায় দিয়েছে, তাতে হস্তক্ষেপ করা হবে না। এর সঙ্গে মামলাকারীদের উদ্দেশে আদালত প্রশ্ন তোলে, রায় ঘোষণার পরে এখন যোগ্য বা অযোগ্যের কথা কীভাবে উঠছে? সম্প্রতি যাঁরা ‘র‍্যাঙ্ক জাম্প’ করে বা মেধাতালিকার ক্রম অনুযায়ী পিছিয়ে থাকার পরেও চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের আবেদনও খারিজ করে দেয় বিচারপতি কুমারের বেঞ্চ। এই নির্দেশ দিতে গিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নির্দেশে কোনও ভুল নেই। র‍্যাঙ্ক জাম্প করে যারা চাকরি পেয়েছেন তাঁরা নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। এ বার নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের ‘অযোগ্য’দের একাংশের আবেদনও খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত।

    মামলাকারীদের আইনজীবী মুকুল রোহতগি, করুণা নন্দীদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট যাঁদের ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল, তাঁদের মধ্যে মূলত তিন ধরনের চাকরিপ্রাপক রয়েছেন। প্রথমত, যাঁরা প্যানেল- বহির্ভূতভাবে চাকরি পেয়েছেন, দ্বিতীয়ত, যাঁরা মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন এবং তৃতীয়ত, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। এই তিন ধরনের চাকরিপ্রাপকের তালিকায় আবেদনকারী চাকরিহারারা নেই। সেই কারণে তাঁদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। অন্যদিকে মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, ফিরদৌস শামিমরা জানিয়েছেন, যাঁরা উত্তরপত্রে কারচুপির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন, তাঁরাও ‘দাগি’ অথবা ‘অযোগ্য’দের মধ্যেই পড়েন। সব পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে মামলাকারীদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার আর্জি খারিজ করে দেয় আদালত।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)