এই সময়, দুর্গাপুর: ফ্ল্যাটের ছাদ ঢালাই হবে। তার জন্য রাস্তার সিংহভাগ দখল করে নির্মাণ সামগ্রী স্তূপ করে রাখছে প্রোমোটার। ঢালাই করার দিনে কোনও অনুমতি ছাড়াই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

অভিযোগ, প্রতিবাদ করলে হুমকি দিচ্ছে প্রোমোটারের লোকজন। পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার অধীন জেমুয়া পঞ্চায়েতের কালীগঞ্জ এলাকায় নিয়মিত এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রোমোটারদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কালীগঞ্জ এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের ছাদ ঢালাই হচ্ছিল। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে ঢালাই শুরু করার আগে দু’ধারে বাঁশ লাগিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেন প্রোমোটারের লোকজন।

বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। প্রায় এক কিলোমিটার ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয় সবাইকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন প্রতিবাদ করেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা রোহিতাশ্রু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি প্রোমোটারের লোকেদের জিজ্ঞাসা করি, কেন ঘুরে যাতায়াত করব। তারা আমাকে জবাব দেয়, পাড়ার মন্দিরটা এমনি বড় হয়নি। মন্দিরের জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। ফ্ল্যাটের প্রত্যেকটি ফ্লোর ঢালাই করার সময়ে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়।’

রাস্তা বন্ধ বা রাস্তার উপর নির্মাণ সামগ্রী স্তূপ করে রাখা শুধু নয়, এখানকার অধিকাংশ প্রোমোটারের বিরুদ্ধে কখনও বাড়ির জমি জোর করে দখল করে নেওয়ার, কখনও রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় জমি না ছেড়ে পাঁচিল তুলে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়া পাম্প বসিয়ে ভূগর্ভস্থ জল তোলার অভিযোগ তো আছেই। কালীগঞ্জ, কালীনগর, আড়া, খৃষ্টানপল্লি সর্বত্র এক ছবি। সম্প্রতি স্থানীয় কিছু বাসিন্দা প্রোমোটারদের অনিয়মের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কয়েকটি ফ্ল্যাটে নির্মাণ কাজের উপর স্থগিতাদেশও জারি করে আদালত।

তারপরেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। স্থানীয় এক বাসিন্দা শুধাজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রতিটি ফ্ল্যাটে অবৈধ ভাবে পাম্প বসিয়ে ভূগর্ভস্থ জল তোলার ফলে এলাকার কুয়োগুলিতে জলস্তর নেমে গিয়েছে। একসময়ে এই সব এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ ফুট খনন করলে কুয়োতে সারা বছর জল থাকত। এখন ৮০ থেকে ৯০ ফুট খনন করার পরেও জল থাকছে না। তা নিয়ে প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও সুরাহা হয়নি।’

পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। সাধারণ মানুষের অসুবিধা করে কেউ ফায়দা তুলবেন, তা হবে না।’