এই সময়, হাসনাবাদ: ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে রাতের আকাশে রহস্যময় আলো! তা নিয়ে আতঙ্ক ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে। গ্রামবাসীদের অনুমান, এটা সম্ভবত বাংলাদেশি ড্রোনের আলো। তবে সত্যিই কোনও বাংলাদেশি ড্রোন ঢুকে পড়েছিল কি না, সেই বিষয়টি অবশ্য এখনও নিশ্চিত করতে বলতে পারেনি পুলিশ কিংবা বিএসএফ।
কয়েক দিন আগে কলকাতার আকাশেও রহস্যময় আলোর সন্ধান মিলেছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় চাউর হয়ে যায় যে, কলকাতার রাতের আকাশে রহস্যময় ড্রোন ঘুরে বেড়াচ্ছে। তা নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় সেনাবাহিনী এবং কলকাতা পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও সেই রহস্যের কিনারা এখনও পর্যন্ত হয়নি।
শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া হাসনাবাদের কাটাখালি সেতু সংলগ্ন এলাকায় প্রথম আলোটি দেখতে পান এলাকার বাসিন্দারা। অনেকেই সেটিকে মোবাইলে ক্যামেরা–বন্দি করেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, রাতের আকাশে একটি আলো টিম টিম করে জ্বলছে-নিভছে। আকাশে রীতিমতো চক্কর কাটছে। হঠাৎ সীমান্তে রাতের অন্ধকারে রহস্যময় আলোর চলাফেরা দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
আশঙ্কায় গ্রামবাসীরা হাসনাবাদ ও হিঙ্গলগঞ্জ থানায় খবর দেন। বিএসএফকেও জানানো হয়। রাতেই তড়িঘড়ি চলে আসেন পুলিশ ও বিএসএফের আধিকারিকরা। রাতের আকাশে টিম টিম করে জ্বলতে থাকা আলো বেশ কিছুক্ষণ ধরে পর্যবেক্ষণ করার পরে তাঁরা ফিরে যান। প্রশাসনিক আধিকারিকরা বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে কিছু জানাতে না চাইলেও স্থানীয় গ্রামবাসীরা দাবি করছেন, রাতের আকাশে ঘুরতে থাকা আলোগুলি আসলে বাংলাদেশি ড্রোন। বাংলাদেশের দিক থেকে এসে আবার ফিরে গিয়েছে।
বসিরহাট মহকুমার পূর্ব দিক বরাবর ১৩৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাংলাদেশের সীমান্ত। যার মধ্যে ৯১ কিলোমিটার জলসীমান্ত ও ৪৪ কিলোমিটার স্থলসীমান্ত। হাসনাবাদের যে এলাকাটিতে বৃহস্পতিবার রাতে রহস্যময় আলো দেখা গিয়েছে, সেটি জলসীমান্ত লাগোয়া। কাছ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ইছামতি নদী। এই নদীর মাঝ বরাবর ভারত ও বাংলাদেশের কাল্পনিক সীমারেখা রয়েছে। দুই দেশই এই জলসীমা ব্যবহার করে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শী কাটাখালি এলাকার বাসিন্দা নুরুল হাসান বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত রাতে ড্রোন দেখা গিয়েছিল। সেটা অনেক নীচ দিয়ে উড়ছিল। ড্রোনের লাইট যেমন জ্বলে, ঠিক তেমনটাই মনে হয়েছে।’
বরুণহাট রামেশ্বরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কালাম গাজি বলেন, ‘রাতে স্থানীয়রা হঠাৎ দেখতে পান, বাংলাদেশের দিক থেকে একটি আলো ইছামতির উপর দিয়ে কাঠাখালি সেতুর আশপাশে ঢুকে পড়ে। কিছুক্ষণ থাকার পরে বাংলাদেশের দিকে ফিরে যায়। আমাদের ধারণা, ওটা ড্রোনেরই আলো।’