২ বছরের মাথায় ময়নার বিজেপি কর্মী খুনে এবার এনআইএর জালে মূল অভিযুক্ত
প্রতিদিন | ২৫ মে ২০২৫
সৈকত মাইতি, তমলুক: ময়নায় বাকচায় বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া খুনে এনআইএ-র হাতে ধৃত মূল অভিযুক্ত তথা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা। শুক্রবার রাতে তদন্তকারী সংস্থা গ্রেপ্তার করে তাঁকে। ওই ঘটনায় মোট মোট ৩৫জন শাসক দলের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ব্লক সহ-সভাপতি অমিতাভ ভঞ্জ, অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরার মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নাম ছিল। আগেই ন’জনকে গ্রেপ্তার করেছিল এনআইএ।
কলকাতা নগর দায়রা আদালতে দীর্ঘদিন ধরেই মামলা চলছে। কোর্ট আগেই অভিযুক্ত মনোরঞ্জন হাজরা, অঞ্চল ও বুথস্তরের তিন নেতা বুদ্ধদেব মণ্ডল, কমল খুটিয়া ও স্বপন ভৌমিকের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছিল। নির্ধারিত দিনে কোর্টে হাজির না হওয়ায় গত ৩ এপ্রিল তাঁদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়। ২১ এপ্রিল তাঁদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের নামে নোটিস ঝোলায় এনআইএ। যদিও নির্ধারিত দিনে ওই চার নেতা কোর্টে হাজিরা দেননি। এই অবস্থায় এক সপ্তাহ আগে এনআইএ মনোরঞ্জনের বড় ছেলেকে আটক করে। যদিও তাঁর নাম এফআইআরে নেই। আটক করার পর তাঁকে ছেড়েও দেয় তদন্তকারী সংস্থা। বাড়ি ফিরে মনোরঞ্জনের ছেলে জানান, তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার চালানো হয়েছে।
এরপর শুক্রবার রাতে এনআইএ বাকচা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরাকে গ্রেপ্তার করে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মনোরঞ্জন এনআইএ অফিসে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। হুলিয়া জারি করে ২১ এপ্রিল নগর দায়রা আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর এক মাস সময় কেটে গিয়েছে। এরফলে যেকোনও সময় সম্পত্তি ক্রোক হয়ে পারে। তাই সবদিক বিবেচনা করে ওই তৃণমূল নেতা আত্মসমর্পণ করেছেন। খুনের ঘটনায় নাম জড়ানোর অধিকাংশ নেতা-কর্মী ঘরছাড়া। এরআগে বেশ কয়েকজনের বাড়ি সিল করে দিয়েছিল এনআইএ।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে ময়নার বাকচার বিজেপি নেতা বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়াকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তার পরই মৃত্যু হয় তাঁর। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তুঙ্গে চাপানউতোর। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি-সহ নিহতের পরিবারের উপযুক্ত নিরাপত্তার দাবিতে সরব হয় বিজেপি নেতৃত্ব। এই খুনের ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তের দাবিও জানিয়েছিল গেরুয়া শিবির। সেই মতো তাঁর বাড়ির সামনে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। তবে তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি। তাই হাই কোর্টে গত বছরেও ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কেন্দ্র। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর শুক্রবার এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।