সংবাদদাতা, লালবাগ: আট বাংলাদেশি ও এক ভারতীয় দালালকে গ্রেপ্তার করেছে মুর্শিদাবাদ থানার পুলিস। ধৃত অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে তিনজন মহিলা রয়েছে। শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদ থানার গৌরীবাগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রায়ই বাংলাদেশি গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের। মুর্শিদাবাদ জেলার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে এদেশে অনুপ্রবেশ ঘটছে। সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের পর রাজ্যের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তারা ছড়িয়ে পড়ছে। এই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করাই এখন প্রশাসনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। একসঙ্গে এত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী গ্রেপ্তার হওয়ায় সীমান্তের প্রহরী বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে সীমান্তে বিএসএফের কড়া নজরদারি এড়িয়ে ওপারের বাসিন্দারা কীভাবে অবৈধভাবে এদেশে ঢুকছে?
অতিরিক্ত পুলিস সুপার(লালবাগ) রাসপ্রিত সিং বলেন, অনুপ্রবেশকারীরা বিভিন্ন সময়ে সীমান্ত দিয়ে এদেশে অনুপ্রবেশ করেছিল। গত কয়েক মাস ধরে গুজরাতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করছিল। দু’দিন আগে গুজরাত থেকে মুর্শিদাবাদে ফেরে। রানিনগরের বাসিন্দা ভারতীয় দালাল জামাল শেখ তাদের ওইদিন রাতে রানিনগরে নিয়ে যাচ্ছিল। রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পেরিয়ে তাদের বাংলাদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সোর্স মারফত খবর পেয়ে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার আগেই অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বাড়ি রাজশাহি, খুলনা, সাতক্ষীরা ও নড়াইল জেলায়। ধৃতদের রবিবার লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ভারতীয় দালাল ও তিন বাংলাদেশির আট দিনের পুলিসি হেফাজত এবং বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় ১২৫ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৪২ কিলোমিটার স্থলভাগে এবং বাকি ৮৩ কিলোমিটার নদী সীমা রয়েছে। স্থলভাগের সীমান্তের বেশ কয়েক কিলোমিটারে কাঁটাতারের বেড়া নেই অর্থাৎ উন্মুক্ত। বিএসএফের নজরদারি থাকা সত্ত্বেও সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটছে। মাঝে মধ্যে বিএসএফ ও পুলিসের হাতে পাকড়াও হলেও অনুপ্রবেশ একেবারে বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এই অনুপ্রবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে দুই দেশের সীমান্তের দালালদের।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দালালদের হাত ধরে কয়েকবারে ধৃতরা এদেশে এসেছিল। দালালের হাত ধরেই ওপারে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এক অনুপ্রবেশকারী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য রানিনগর থানা এলাকার ওই দালালের সঙ্গে তারা সপ্তাহ খানেক আগে যোগাযোগ করে। তার কথামতো দু’দিন আগে তারা মুর্শিদাবাদে ফিরে আসে। ওইদিন রানিনগর সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সেইমতো ভারতীয় দালালের সঙ্গে চারচাকা গাড়িতে চেপে রানিনগরের সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। তখনই পুলিস তাদের ধরে। -নিজস্ব চিত্র