সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের দক্ষিণ খয়েরবাড়ি চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রের আবাসিক স্ত্রী বাঘ মোনা ও শিবানী নতুন অতিথি হিসেবে বর্ধমানে চলে যাচ্ছে। আজ, শনিবার বর্ধমান চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ মোনা ও শিবানীকে নিয়ে সড়কপথে বর্ধমানে রওনা দেবে।
স্ত্রী চিতাবাঘ মোনা ও শিবানী করোনাকালে উদ্ধার হয়েছিল ডুয়ার্সের চা বাগান থেকে। মোনা উদ্ধার হয় ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর মেটেলির সামসিং চা বাগান থেকে। তখন শাবকটির বয়স ছিল মাত্র তিনবছর। শাবকের মা চিতাবাঘটি পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল। অন্যদিকে, ওই বছরেরই ১৪ ফেব্রুয়ারি শিবানীকে উদ্ধার করা হয় মাদারিহাটের তুলসীপাড়া চা বাগান থেকে। তখন শাবক শিবানীর বয়স ছিল একবছর।
উদ্ধার হওয়ার পর শাবক দু’টির ঠাঁই হয় দক্ষিণ খয়েরবাড়ি চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রে। কিন্তু কেন খয়েরবাড়ির স্ত্রী চিতাবাঘ দু’টিকে বর্ধমান চিড়িয়াখানায় পাঠানো হচ্ছে? বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রে ২৩টি চিতাবাঘ রয়েছে। পুনর্বাসন কেন্দ্রটি বর্তমানে চিতাবাঘে উপচে পড়ায় খাবারের জোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জলদাপাড়া বনবিভাগ কর্তৃপক্ষকে। জায়গা সংকুলানেও সমস্যাও হচ্ছে। অন্যদিকে, বর্ধমান চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষও দু’টি চিতাবাঘের জন্য গত একবছর ধরে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করে যাচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিতাবাঘের দেখভাল করছেন ওয়াইল্ড লাইফ গার্ড পার্থসারথি সিনহা। মোনা ও শিবানীকেও শৈশব থেকে লালনপালন করেছেন তিনি। চিতাবাঘ দু’টির বর্ধমান চিড়িয়াখানায় চলে যাওয়ার খবরে স্বাভাবিকভাবেই মন ভারাক্রান্ত পার্থসারথিবাবুর।
তবে বনদপ্তর জানিয়েছে, রাজ্যের চিড়িয়াখানাগুলিতে বৈচিত্র্য বাড়াতে ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি থেকে অন্যত্র চিতাবাঘ স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার উত্তরবঙ্গের প্রধান মুখ্য বনপাল ভাস্কর জে ভি বলেন, দু’টি চিতাবাঘের জন্য বর্ধমান চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ গত একবছর ধরেই অনুরোধ করে যাচ্ছে। তাছাড়া দক্ষিণ খয়েরবাড়ি চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিতাবাঘে উপচে পড়েছে। তাই চিতাবাঘের বোঝা কিছুটা হালকা করতেও চিতাবাঘগুলিকে বর্ধমান চিড়িয়াখানায় পাঠানো হচ্ছে। শনিবার বাঘ দু’টি যাচ্ছে।